নরসিংদীতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম

নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে গলাকেটে হত্যার দায়ে স্বামী ফখরুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন এ আদেশ প্রদান করেন। একই সাথে আসামিকে আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে। তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে পারিবারিকভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সাথে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমীর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন। ফখরুলের চাকরি না থাকায় প্রায় সময় রেশমীর কাছে টাকা পয়সা চাইতেন, টাকা না দিলে রেশমীকে মারধোর করতেন। এরই মধ্যে তাদের কোল জোড়ে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সবশেষ ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে শহরের ঘোড়াদিয়ার সঙ্গীতা নিজ বাড়িতে স্ত্রী রেশমী আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমান সাফায়াতকে গলাকেটে হত্যা করেন। হত্যার পর অভিযুক্ত ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হত্যার বিষয়টি টের পেয়ে ফকরুলের বড় ভাই শরীফ ধাওয়া দিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেন। হত্যার ঘটনায় নিহত রেশমীর পিতা পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ের জামাই ফখরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ দেড় বছর মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সন্দেয়াতিতভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন হত্যা মামলার এমমাত্র আসামি ফখরুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নরসিংদী জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট এম এন অলিউল্লাহ, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট রোজিনা আক্তার।

মামলার আইনজীবী নরসিংদী জজকোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৩ কার্য দিবসে মামলা শেষ হয়েছে। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। আমরা আসামির সবোর্চ্চ শাস্তি দাবি করেছি। আদালত সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করেছেন। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা মনে করি মামলার বাদী স্বল্প সময়ের মধ্যে সঠিক বিচার পেয়েছেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh