আশুলিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম
অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবক। ছবি: আশুলিয়া প্রতিনিধি
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় অপহরণের ১০ দিন পর বিল থেকে ফারাবি আহমেদ হৃদয় (২২) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে র্যাব-৪। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে আশুলিয়ার মোজারমিল এলাকার একটি বিল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জ জেলার ময়েজ উদ্দিন ওরফে পরান (২২), বগুড়া জেলার সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পি (২৩) ও আকাশ নামের অপর একজন। তারা আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৪ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা ও ভুক্তভোগী হৃদয় একই এলাকার বাসিন্দা এবং পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। হৃদয়ের বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি। গ্রেপ্তারকৃত আসামি পরান ও তার সহযোগী সুমন মিয়া, আকাশ এবং পলাতক শাহীন আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিল।
র্যাব আরো জানায়, পূর্ব পরিকল্পনাতে গত ৮ মে বিকেলে আসামিরা ভুক্তভোগীকে আড্ডা দেওয়ার কথা বলে সুকৌশলে আকাশের বাসায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে আসামিরা হৃদয়কে জোরপূর্বক রশি দিয়ে বেঁধে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার বাবাকে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে হৃদয়ের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং পরবর্তীতে তার মুখে বালিশ চাঁপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। একই দিন সন্ধ্যায় মরদেহ বস্তায় ভরে রিকশাযোগে মোজারমেল এলাকায় একটি বিলে ফেলে দেন। পরে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান।
পরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় কলেজছাত্র হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৪ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রহমান জানান, একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত ভিকটিকে উদ্ধার ও আসামি গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভুক্তভোগীর মরদেহ উদ্ধারপূর্বক অপহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত পরান, বাপ্পি ও আকাশকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।