বরিশাল সিটি নির্বাচন: দানের টাকায় নির্বাচন করছে ইসলামী আন্দোলন

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ০৯:২০ পিএম

বরিশাল সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া ছয়জন। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশাল সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া ছয়জন। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

নির্বাচন মানেই টাকার ছড়াছড়ি। এমনটির কথিত থাকলেও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় তার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেননা এ নির্বাচনে বৈধতা পাওয়া ছয় মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের সর্বোচ্চ ব্যয় দেখানো হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। আবার কোন কোন প্রার্থী নির্বাচন খরচ দেখিয়েছেন মাত্র ৫ লাখ টাকা।

এদের মধ্যে চারজন প্রার্থী নিজস্ব আয়ে নির্বাচনী ব্যয়ের কথা বললেও দানের টাকায় নির্বাচন করবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। আর বউয়ের টাকায় নির্বাচন করবেন জাকের পার্টির প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান বাচ্চু।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত নির্ধারিত ফরমে নির্বাচনী ব্যয়ে এমন তথ্যই উল্লেখ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী।

নির্বাচনী খরচের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এবং দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফরমে নির্বাচনে ছয় লাখ টাকা ব্যয় করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

এর মধ্যে নিজের আয় (হাদিয়া) থেকে দুই লাখ টাকা, বড়ভাই ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে ৩ লাখ এবং আব্দুল মালেক কাফরা নামের একজন ব্যক্তির কাছ থেকে এক লাখ টাকা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দানের প্রাপ্ত অর্থ।

অপরদিকে স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা ধার করে নির্বাচন করছেন বলে তথ্য দিয়েছেন জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন, এই নির্বাচনে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করবেন তিনি। যেখানে নিজের নগদ তহবিল থেকে ৪ লাখ এবং স্ত্রী নাসরিন পারভীনের কাছ থেকে ধারবাবদ ২ লাখ টাকা ব্যয় করবেন।

এদিকে নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করবেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি কারও সহযোগিতা ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে এই খবর বহন করবেন বলেন বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে।

জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসও কারও সহযোগিতা ছাড়া ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্বাচনে ব্যয় করবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার নিজের ব্যবসা থেকে ৫ লাখ টাকা নির্বাচনে ব্যয় করবেন। আর সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন নিজের ব্যবসা থেকে ৫ লাখ টাকা নির্বাচনে ব্যয় করবেন বলে নির্বাচন কমিশনের ফরমে তথ্য দিয়েছেন।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস, প্রার্থীর কেন্দ্রীয় ক্যাম্প বা অফিস, প্রার্থীদের অফিস আপ্যায়ন, ঘরোয়া বৈঠক বা সভা, ভোটার সিল্প, সিডি, যাতায়াত, মাইকিং, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ডিজিটাল ব্যানার এবং পোস্টার বাবদ নির্বাচনী খরচ দেখানো হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয়ের এমন তথ্য দিলেও বাস্তবতা ভিন্ন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবার নির্বাচন অফিসে প্রার্থীদের দেওয়া এমন তথ্যকে হাস্যকর বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে। তাদের মতে প্রচার-প্রচারণা, সভাসহ নির্বাচন পরিচালনায় এক একজন প্রার্থীর লাখ লাখ টাকা খরচ। যা একজন মেয়র প্রার্থীর প্রকৃত নির্বাচনী ব্যয়ের হিসেবে একেবারেই সাধারণ।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh