পাঁচ হাজার টাকায় ধর্ষণ চেষ্টার ধামাচাপা দিলেন মেম্বার

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৩, ০৯:০৫ পিএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বরিশালের বাকেরগঞ্জে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুই সন্তানের জনকের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনা মাত্রা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, আর ৭টি বেত্রাঘাতে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ কিশোরীর পরিবারের।

গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের বাদলপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার রাতে সালিশ করে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুব হোসেন রাজা।

কিশোরীর মা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মেয়েকে ঘরে একা রেখে তারা মুগডাল তুলতে ক্ষেতে যান। সেই সুযোগে প্রতিবেশী মাছ ব্যবসায়ী এবং মৃত ফজলে সিকদারের ছেলে খলিল সিকদার মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

কিশোরীর মা বলেন, ঘটনার পরে মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মুগডাল ক্ষেতে যান। তখন কান্না কারার কারণ জানতে চাইলে আমাকে ঘটনা খুলে বলেন। তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েকে নিয়ে খলিলকে খুঁজতে তার বাসায় গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে বাড়ির পাশে দোকানে কাছে স্থানীয় আমির মাস্টার ও সোহাগের সাথে দেখা হলে ঘটনাটি তাদেরকে অবহিত করি। তারা মেম্বারকে (ইউপি সদস্য) সাথে নিয়ে ঘটনাটি সালিশ-মীমাংসার কথা বলেন।

কিশোরীর মা অভিযোগ করেন, ঘটনার একদিন পর বুধবার রাতে আমার ঘরে সালিশ বসান চরামদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহাবুব হোসেন রাজা। এসময় স্থানীয় শামিম হাওলাদার ও শাসমু মল্লিকও উপস্থিত ছিলেন।

ওই ইউপি সদস্য ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না দিয়ে বরং অভিযুক্ত খলিল সিকদারের পক্ষ নিয়ে শাস্তি হিসেবে ৫০টি বেত্রাঘাত এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে। তবে বেত্রাঘাত ৫০টি নির্ধারণ হলেও মাত্র ৭টি বেত্রাঘাত করে ঘটনাটি সমঝোতার কথা বলেন ইউপি সদস্য রাজা। তবে মেয়ে পুলিশের কাছে যেতে চাইলে মেম্বার ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেছেন, আমি যে সালিশ করেছি সেটা মেনে নিতে হবে।

গৃহবধূ বলেন, আমরা অসহায়। এখন মেম্বারের সাথে বিরোধ করে গ্রামে থাকতে পারবো না। তবে আমি একজনের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ এখানে আসতে পারবে না, তারা আমাকে থানায় যেতে বলেছেন।

চরামদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহাবুব হোসেন রাজা বলেন, যা ঘটেছে সেটা কোন ঘটনাই না। মেয়েটিকে একটু চেপে ধরছে, তাতে কি হয়েছে। তার পরেও আমি সালিশ করে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আর ৭টি বেত্রাঘাত করেছি।

এটি কোন সালিশযোগ্য অপরাধ কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম পুলিশের কাছে যেতে। কিন্তু কিশোরীর মা যাবে না। তারা আমাকে সালিশ করতে বলছে। আর আমি মেম্বার সালিশ করতেই পারি।

এ প্রসঙ্গে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান বলেন, ধর্ষণ চেষ্টা কোন সালিশযোগ্য অপরাধ না। তবে এমন কোন ঘটনা ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh