ইবিতে বেড়েছে সেশনজট, কমেনি ছুটি

ইমানুল সোহান, ইবি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৩, ১০:২১ এএম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

করোনা পরবর্তী কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে সেশনজট তৈরী হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তবে সেশনজট থেকে উত্তরণের চিন্তা নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক ক্যালেন্ডার বিশ্লেষণ করে এমনটি দেখা গেছে।

ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২২ সালের জুলাই থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত ১৮০ দিনই ছুটিতে থাকবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই হিসাবে ক্যাম্পাস খেলা থাকছে ১৮০ দিন। এর মধ্যেই ৩৬টি বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা নিতে হবে শিক্ষকদের। দীর্ঘ ছুটির কারণে একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

ক্যালেন্ডারে দেখা যায়, এই ১৮০ দিনের মধ্যে শুক্র ও শনিবারের মোট সাপ্তাহিক ছুটি ১০৫ দিন। এছাড়া ঈদুল ফিতর, আজহা, দুর্গাপূজা, গ্রীষ্ম ও শীতকালীনসহ অন্যান্য ছুটি মিলে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে ৭৫দিন। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইবির সব বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। এ নিয়মে প্রতি বিভাগকে বছরে দুটি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। দীর্ঘ ছুটি থাকার কারণে অনেক বিভাগের শিক্ষকরা ক্লাস শেষ না করেই পরীক্ষা নিয়ে থাকেন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ইংরেজি, বাংলা, আল ফিকৃহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ, ইইই, পরিসংখ্যান বিভাগে সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। এই বিভাগগুলো সেশনজট কাটানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদিকে আগামী জুন মাসে গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আযহার ছুটিতে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সে মাসের মাঝে এক সপ্তাহ খোলা রেখে পুরো মাস ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মিশ্রু প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, আগামী জুন মাসের ১ তারিখে ক্যাম্পাস গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যাবে। আবার ১৩ তারিখে ক্যাম্পাস খুলে ২২ তারিখে ঈদের ছুটি শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে ছুটি কমিয়ে এনে আমাদের সেশনজট কমাতে পারতো। কিন্তু এতে তাদের মাথাব্যথা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিভাগুলোতে  মূল পরীক্ষার পাশাপাশি রয়েছে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এসব বিভাগের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হতে এক মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়। ব্যবহারিক পরীক্ষায় সময় লাগে আরো ১৫ দিন। সেমিস্টারের দীর্ঘ সময় পরীক্ষা থাকায় সময়মতো কোর্স সম্পন্ন হচ্ছে না।

এ বিষয়ে  ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র আরিফ হোসেন বলেন, এই অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব শেষ করতে হয়। এতে আমরা গুণগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই ছুটি কমিয়ে আনলে আমরা উপকৃত হব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষকরা কমপক্ষে সাড়ে তিন মাস ক্লাস নেবেন। তাহলে দুই সেমিস্টার মিলে ক্লাস নিতে হবে ৭ মাস। আর ক্লাস শেষের ১৫ দিন পর পরীক্ষা হবে। এক সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ করতে কমপক্ষে সময় লাগে এক মাস। সেই হিসাবে কোর্স ও পরীক্ষায় সময় লাগার কথা ৯ মাস, অর্থাৎ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার জন্য ২৭০ দিনের প্রয়োজন। কিন্তু ক্যালেন্ডার হিসাবে ১৮০ দিনে তাদের ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বহু টিচার, বহু কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ হজ্বে, কেউ বিদেশে যাওয়ার জন্য ছুটি নিয়েছেন। এটা চেন্জ করতে গেলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে পারে। এজন্য এটা করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বছর থেকে ক্যালেন্ডার কমিটিকে বিষয়গুলো দেখতে বলেছি আমি।

এছাড়াও সেশনজটের বিষয়ে তিনি বলেন, একাডেমিক কমিটি সেশনজটের বিষয়গুলো মনিটরিং করবে। আমার পক্ষে ওই মনিটর রাখা তো সম্ভব না।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh