সিটি নির্বাচন

বরিশালে প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় প্রার্থীরা

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৩, ০৬:৪১ পিএম

বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আজ শুক্রবার (২৬ মে) সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করেন। 

এদিকে, প্রতীক পাওয়ার সকল মেয়র প্রার্থীই আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিজয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। তারা সদ্য অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ন্যায় একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে, শুক্রবার সকালে নগরীর কাশিপুর এলাকায় বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও পেয়েছেন তাদের পছন্দের প্রতীক।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস ‘লাঙ্গল’, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ‘হাতপাখা’ এবং জাকের পার্টির প্রার্থী মো. মিজানুর রহমানের হাতে দলীয় প্রতীক ‘গোলাপ ফুল’ তুলে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রূপন গাজীপুর সিটি করপোশেন নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের প্রতীকেই আস্থা দেখেছেন। তিনিও বরিশাল সিটি নির্বাচনে ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক চেয়েছেন।

এই প্রতীকেই বরিশাল সিটিতে নির্বাচন করেছিলেন রূপনের বাবা সাবেক মেয়র ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত আহসান হাবিব কামাল।

অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলী হোসেন হাওলাদার ‘হরিণ’ এবং মো. আসাদুজ্জামান পেয়েছেন ‘হাতি’ প্রতীক।

প্রতীক পেয়ে বিজয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আগামী ১২ জুন নির্বাচনে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি 

তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হতে পারলে বরিশাল সিটি করপোরেশন উম্মুক্ত হবে, সব মানুষেরই পদচারণা হবে এখানে। ট্যাক্সের বিড়ম্বনা, জলাবদ্ধতা, প্ল্যান এবং বর্ধিতকরণ; এগুলো প্রধান সমস্যা। আমি নির্বাচিত হলে অবশ্যই এগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো।

অপরদিকে, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতীক গ্রহণের পর জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমি বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এখানে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আর আমি নির্বাচিত হলে অবহেলিত বরিশালের উন্নয়ন এবং নগরবাসীর নাগরিক সেবা শতভাগ নিশ্চিত করবো।

তবে প্রতীক প্রাপ্তির পরপর কাশিপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। যা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

অপরদিকে, প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপনসহ অন্যান্য প্রার্থীরা।

এদের মধ্যে সৈয়দ রেজাউল করীম শুক্রবার বাদ জুমা নগরীর সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বর থেকে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন। এরপর নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।

এসময় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করীম বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন অবহেলিত। এখানে উন্নয়ন প্রয়োজন। আমি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। আর আমি নির্বাচিত হলে সকল নাগরিকদের সাথে নিয়ে একটি সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে চেষ্টা করবো।

এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রূপন প্রতীক পেয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় নিজ এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু করেন। তিনি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রিফিউজি কলোনি, কাজীপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেছেন।

এসময় নগরবাসীর উন্নয়ন ও পাশে থাকার সুযোগ চেয়ে রূপন বলেন, আমার বাবা প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামাল ‘ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে আমি প্রতীক হিসেবে ‘টেবিল ঘড়ি’ চেয়েছিলাম এবং পেয়েছি।

বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা চালাতে কোন বাধা নেই। তবে মেয়র এবং কাউন্সিলর সকল প্রার্থীদের নির্বাচন আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে। তারা আচরণবিধি মেনে প্রচারণার করার বিষয়ে সহযোগিতা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দ্বিতীয় পর্যায়ে ইভিএমের তিনদিনের কারিগরি প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। আগামী ২৫ মে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ শেষ হয়।

এই কর্মকর্তা বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ৫০ জন অংশ নিয়েছিলেন। প্রথম পর্যায়ে ৮৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৩৬ জন প্রশিক্ষণার্থীকে ১২ জুনের নির্বাচনে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ইভিএম সুরক্ষায় ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৬৫ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চারজন দলীয় প্রার্থীসহ মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৬ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিপ্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪২ জন।

বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh