প্রাচ্যের ঐতিহাসিক ও বাংলার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ইমন হাওলাদার

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১২:৫৭ পিএম

ঢাকা কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ব্রিটিশ শাসকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কলেজটি সু-প্রাচীন কাল থেকে গৌরবের স্থান লাভ করে আসছে। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা যেমন নিজেকে গড়ার হাতিয়ার সঞ্চয় করেছে, তেমনি করেছে অন্যকে গড়ার। যুগে যুগে তৈরি হয়েছে হাজারো বীরবল।

১৭৫৭-১৯৪৭ ব্রিটিশ শাসক দ্বারা শাসিত বাংলা এবং ১৯৪৭-১৯৭১ পশ্চিম পাকিস্তান দ্বারা শাসিত পূর্ব পাকিস্তান। যখন ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রুপ নেয়। তখন থেকে আজ স্বাধীনতার ৫২ বছরে অনেক কিছুর সংস্কার পরিপূর্ণতা পেলেও। পরিপূর্ণতা পায়নি ঐতিহাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫০০০+ যেখানে অধিকাংশ ছেলেরাই আসে গ্রাম আর জেলা শহর থেকে। যাদের জনবহুল ও ব্যয়বহুল রাজধানী ঢাকায় থাকতে পড়তে হয় চরম বিড়াম্বনায়। কলেজেও নেই থাকার পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা।২৫০০০+ শিক্ষার্থীর জন্য ৮টি হল। ৮টি হলের ২টা ২তলা, ৪টা ৩ তলা, ২টা ৫ তলা। যার একটি বরাদ্দ একাদশ-দ্বাদশ শিক্ষার্থীদের জন্য। তাও আবার সবগুলো হল পুরাতন আর জরাজীর্ণ।

শিক্ষার্থীদের জন্য বাস আছে ৮ টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবি সামান্য। যার ফলে বাসা ভাড়া করে বা ম্যাসে থাকা শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় দুর্বিসহ শিক্ষা জীবন। ১৮.৫ একর আয়তনের ঢাকা কলেজের আবাসিক হলের সামনে নেই একটা ফ্লেক্সিলোডের দোকান, না আছে বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা। আবাসিক ভবনের সামনে তিন-চারটি দোকান নামের কাজের কিছুই না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও পাওয়া যায় না কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী,নেই একটা ওষুধের দোকান।

২টা হোটেলের ব্যবস্থা থাকলেও ১টা পড়ে আছে তালাবদ্ধ হয়ে। একটা হোটেল থাকার কারণে ইচ্ছে মতো দাম নির্ধারণ করে নিয়ে নিচ্ছে। যা মোটেই শিক্ষার্থী বান্ধব নয়। হলের ডাইনিং নামক সুস্বাদু শব্দের সাথে জড়িয়ে আছে এক ঘৃনিত খাবার পরিবেশন ব্যবস্থা। যেখানে ৮ হলে আট ধরনের মূল্য নির্ধারণসহ, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হয়। অনেকেই এর জন্য বেশি টাকা দিয়ে বাইরে খায়।

আমাদের প্লেটে উঠে বাজারের পঁচা মাছ, রোগা মুরগির মাংস, জাতীয় খাবার আলু। এর পরে আবার খাবার প্লেটের নাজুক অবস্থা। যেন দেখার কেউ নেই। কয়েক দিন পরপর আবার ক্যাফেটেরিয়া বন্ধের আভাস। প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আমাদের খাবারে সরকার মহলের ভর্তুকি দেওয়া উচিত। আমাদের ঐতিহাসিক কলেজে একটা কেন্দ্রিয় লাইব্রেরই নেই যেখানে বসে আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারে। নতুন ভবনে দুইটা কক্ষ রাখা হয়েছে যেখানে ৮-২টা পর্যন্ত তারা পড়াশোনা করতে পারে ১২০-১৩০ জন। ২টার পরে ইসলামিক ইতিহাস কক্ষে তারা পড়াশোনা করে। যা প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প। যার কারণে অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করে। যা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের একটা বিষয়। এত সুনাম ধন্য ও ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেন কিছুই নেই প্রতিষ্ঠানটির। প্রতি বছর একটা করে সংস্কার হলেও আজ ১৮২টা সংস্কার হবার কথা। 

তাই শ্রদ্ধেয় সরকারি মহলের কাছে আকুল আবেদন আপনারা অনুগ্রহ পূর্বক ঢাকা কলেজের সংস্কারের দিকে দৃষ্টিপাত করুন।


ইমন হাওলাদার
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh