জাতীয় নির্বাচনের পর জাকসু নির্বাচন: জাবি উপাচার্য

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ০৪:২২ পিএম

সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে জাবি উপাচার্য। ছবি: জাবি প্রতিনিধি

সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে জাবি উপাচার্য। ছবি: জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের পর জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। আমি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সমাবর্তন করেছি, যা আট বছর আটকে ছিল। গণরুম প্রথা উঠিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার জন্যে পর্যায়ক্রমে শিক্ষকদের নির্বাচন দেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় (জাবি) জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (জাডস) এর আয়োজনে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তরুণদের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক সম্পূরক আলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশুর সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় উপাচার্য আরো বলেন, ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে অনুরোধ আপনারা যেকোনো সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবেন। নিজেদের ভুল বোঝাবুঝি থেকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

এসময় জাবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, ঢাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান, জাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ রেজা, সেভ দ্য চিলড্রেনের হেড অব মিডিয়া নুসরাত আমিন, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রেং ইয়ং ম্রো আলোচনায় অংশ নেন।

মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্ররাজনীতিতে শিক্ষার্থীদের মতামত ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার যাত্রাপথে ছাত্রদের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। স্বাধীনতার পর ৯০ দশকের আন্দোলনেও ছাত্ররা ভূমিকা পালন করেছে। তবে এরপর রাজনীতিতে ছাত্ররা অপাংক্তেয় হয়ে গেছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়তে চাইলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ছাত্রদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে আজকের বাস্তবতা মিলছে না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছাত্ররাই প্রধান শ্রেণি হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। তবে পরবর্তীতে সাংগঠনিক রাজনীতির ধারা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় চার নেতা বয়সে সবাই কম ছিল। রাজনৈতিক দলে কর্মসূচি পালন করা একটা অংশ আর গবেষণা ও পড়াশুনায় মনোযোগী হওয়া অন্য একটা পার্ট। ছাত্রদের শুধু মিছিল মিটিং করলে হবে না। রাজনীতির কনভেনশনাল ধারা থেকে বের হয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা পালন করতে হবে।

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক ও ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি যেমন আছে, শিক্ষক রাজনীতিও আছে। রাজনীতির  ধারা বহুদিন ধরে চলছে। শিক্ষকদেরও রাজনীতি করার অধিকার আছে। তবে ক্লাস ক্যান্সেলের অপসংস্কৃতি আছে। অনেক শিক্ষকরাই কম ক্লাস নেন। প্রভাষক  থেকে সহকারী-সহযোগী হলেই তারা কম ক্লাস নেন। অধ্যাপক হয়ে গেলে একেবারেই আসেনই না। শিক্ষকরা এ স্বাধীনতাকে মনে করেন স্বেচ্ছাচারিতা। আমাদের কর্মসংস্কৃতিতে ফিরে যেতে হবে।

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগ সবচেয়ে আলোচিত সংগঠন। ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম বলেই আমরা কখনো কখনো অন্যায় আক্রমণের শিকার হই। বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রিয়তার কারণে ছাত্রলীগের আধিপত্য রয়েছে। তবে সংগঠনের নেতিবাচক খবর আমাদের ব্যথিত করে। কর্মীরা অনেকে ব্যক্তিগত অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সমস্যা কাটিয়ে আমরা এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে চাই, দক্ষ মানুষ তৈরি করতে চাই। ছাত্ররাজনীতি গুণগত মান হারাচ্ছে তবুও তরুণতা আকৃষ্ট হচ্ছে। আগের তুলনায় ছাত্রদের অংশগ্রহণ বেড়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh