নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৩, ০৬:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৯ মে ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
প্রতীকী ছবি।
শেষ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা
কার্যকর না হলেও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের বেতন
প্রতিবছর যতটা বাড়ার কথা, এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে।
এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা নিজেই। সপ্তাহখানেক আগে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতির
সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
সরকারি সূত্রগুলো জানাচ্ছে,
বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার কোনটি ধরা হবে—আগামী ১ জুন বাজেট ঘোষণার পর
তা নিয়ে কাজ করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার
পর থেকেই এ ব্যাপারে নতুন করে ভাবা শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। আগে তারা এমন হিসাব কষে
রেখেছিল যে ১০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতায় ৪ হাজার কোটি, ১৫ শতাংশে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশে
৮ হাজার কোটি টাকা বাড়তি প্রয়োজন হবে।
অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো
বলছে, এখন অঙ্কের চেয়ে প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে মনোযোগী অর্থ বিভাগ।
২০১৫ সালের বেতন কমিশনেই
বলা ছিল যে প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হবে সরকারি কর্মচারীদের।
সে অনুযায়ী তা হয়েও আসছে। জানা গেছে, ২০১৫ সালে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে ৫ শতাংশের মতো
ছিল বলেই ইনক্রিমেন্ট একই হারে বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছিল। এখন মূল্যস্ফীতি বেশি বলেই
ইনক্রিমেন্টের হার বৃদ্ধির আলোচনাটি চলছে।
হারটি কত পারে, তা নিয়েও
জল্পনাকল্পনা চলছে অর্থ বিভাগে। আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ধরা হচ্ছে
৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে এ হারই হতে পারে বেতন বৃদ্ধির একটা ভিত্তি। আবার বাজেট
ঘোষণার পর জুন বা জুলাই শেষে মূল্যস্ফীতির হার কত থাকে, সেটাও হতে পারে আরেকটা ভিত্তি।
উভয় বিকল্প হাতে নিয়েই এগোচ্ছে অর্থ বিভাগ। তবে যখনই প্রজ্ঞাপন জারি হোক না কেন, তা
কার্যকর করা হবে পেছনের তারিখ বা অর্থবছরের প্রথম দিন ১ জুলাই থেকে।
২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে
বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশ হবে। তবে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের
বেশি হলে বেতন বৃদ্ধির হারও সে অনুযায়ী হবে। যদিও তা মানা হয়নি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান
ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর গত
বছরের আগস্টে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মিল রেখে বেতন বৃদ্ধি করা হলে আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ কয়েক হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে।