আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৩, ০৬:১৫ পিএম
সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবের
যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন
সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মধ্যে
বৈঠকে সৌদি আরবকে
ইসরায়েলের সঙ্গে
সম্পর্ক স্থাপনের অনুরোধ
জানিয়েছেন এই
শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক।
আর সৌদি
আরবও নিজেদের বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প চালু ও
বাস্তবায়নে মার্কিন সহযোগিতা ও
এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তার শর্তের
বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে
সম্পর্ক স্বাভাবিকে রাজি
হয়েছে।
আজ বুধবার (৭ জুন) বার্তা
সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়,
ভোরে জেদ্দায় এ
বৈঠকে দুই নেতা
দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে
'খোলামেলা আলোচনা
করেছেন। এর মধ্যে
ইসরায়েল-সৌদি আরব
সম্পর্ক অন্যতম।
এর আগে
মঙ্গলবার গভীর
রাতে ব্লিঙ্কেন সৌদি
আরব পৌঁছান।
এবারের সফরের
মূল লক্ষ্য হলো,
ইরান ও আঞ্চলিক তেল
সহযোগিতা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে
রিয়াদের সম্পর্ককে স্বাভাবিক করা।
ব্লিনকেন সৌদির
ডি ফ্যাক্টো শাসক
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন
সালমানের সাথে
আলোচনাও করেছেন বিষয়গুলো নিয়ে ।
এসময় অর্থনৈতিক নানা বিষয়সহ
গভীর আঞ্চলিক সহযোগিতা, জ্বালানী ও
প্রযুক্তিখাত নিয়ে
আলোচনা হয়েছে বলে
জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
এদিকে বিশ্লেষকদের আশা, ব্লিঙ্কেনের এই বহুল
প্রতীক্ষিত সফরে
এ বিষয়গুলোর সমাধান
হবে।
আর ওয়াশিংটন মনে করছে,
কয়েক দফা আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি
আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকের পাশাপাশি এ
অঞ্চলে রুশ ও
চীনা আধিপত্য কমার
সম্ভাবনা রয়েছে।
এমবিএস নামে
পরিচিত সৌদি যুবরাজের সঙ্গে ১
ঘণ্টা ৪০ মিনিটের বৈঠক করেন
ব্লিনকেন বলে
জানিয়েছেন এক
মার্কিন কর্মকর্তা।
এসময় ইসরায়েল, ইয়েমেন ও
সুদানের সংঘাত এবং
মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে
বলে জানান তিনি।
নাম না
প্রকাশের শর্তে
ওই কর্মকর্তা বলেন,
উভয় দেশের স্বার্থ জড়িত রয়েছে
এমন কিছু সম্ভাব্য যৌথ উদ্যোগ
ও মতভেদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা
হয়েছে।
আর আলোচনার বড় অংশ
জুড়েই ছিল সৌদি
আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরির
বিষয়টি।
তবে কর্মকর্তারা মনে করছেন,
খুব সহজে বিষয়টিতে অগ্রগতির সম্ভাবনা খুব
কম।
এর আগে
২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন
করে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
আর এ
বিষয়ে আপত্তি না
জানালেও অনুকরণও করেনি
রিয়াদ। সে সময়
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টির মধ্যস্থতা করেছিলেন।
রিয়াদ জানায়,
ফিলিস্তিনি জাতির
লক্ষ্য সর্বাগ্রে পূরণ
করতে হবে। এর
আগে গত এপ্রিলে ইসরায়েলের শত্রু
হিসেবে বিবেচিত ইরানের
সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে সৌদি
আরব।
এদিকে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত আছে
এমন একটি সূত্র
রয়টার্সকে জানায়,
ইসরায়েলের সঙ্গে
সম্পর্ক স্বাভাবিকের বিপরীতে নিজেদের বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প চালু ও
এটির সঠিক বাস্তবায়নে মার্কিন সহযোগিতা এবং এ
সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়ার
জোর দাবি রয়েছে
রিয়াদের।
অন্যদিকে নিউইয়র্ক টাইমস গত
মার্চে এ বিষয়ে
প্রতিবেদন প্রকাশ
করলেও সৌদি আরব
বা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি
নিশ্চিত করেননি।
ব্লিনকেনের সফরের
সময় সৌদিতে বন্দি
মার্কিন নাগরিক ও
তাদের পরিবারের মুক্তির দাবিতে ব্লিনকেনের কাছে চিঠি
দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সৌদি সংবাদমাধ্যম। বন্দীদের মধ্যে
রয়েছেন, সালমান আল
অদাহ, সাবেক প্রধান
গুপ্তচরের ছেলে
সাদ আল- জাবরি,
মানবাধিকার কর্মী
মোহাম্মেদ আল-
কাহতানি ও ত্রাণ
কর্মী আবদুল রাহমান
আল-সাদনান।
তবে সৌদি রাজ সরকার এর আগে কিছু বন্দিদের মুক্তি দিলেও আরও বেশ কিছু এখনও বন্দিদশায় রয়েছেন আর বাকিদের উপর রয়েছে দেশটিতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।_[রয়টার্স, আল-জাজিরা]