স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ২ অভিযুক্তকে পুলিশে দিলেন মা-বাবা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০৫:০০ পিএম

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজন। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজন। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গৃহবধূ (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার ছয়দিন পর দুই অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে মা-বাবা।

গতকাল মঙ্গলবার (২০ জুন) রাত ১১টার দিকে পুলিশ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভী বাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। গত রবিবার ১৮ জুন এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগীর স্বামী মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে বুধবার ১৪ জুন বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পর্যটন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের একরামুল হকের ছেলে রিয়াদ (৩০) ও মুছাপুর ক্লোজারের রেগুলেটর মোড়ের আলা উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮)। তবে এ মামলার প্রধান আসামি মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের নুর নবীর ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫) পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ১৪ জুন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গৃহবধূ (১৮) তার স্বামীর সাথে নোয়াখালীর সদর উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল যোগে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর সুইচ গেইট এলাকায় ঘুরতে আসে। সুইচ গেইট পার হয়ে পূর্বদিকে বাগানের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময় আসামি জাহাঙ্গীর, রিয়াদ ও জালাল উদ্দিন হাতে ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়া ঘটনাস্থলে ভিকটিম ও তার স্বামীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে তিন আসামি ভিকটিমের স্বামীকে গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বেঁধে তার স্ত্রীকে বাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। অপর আসামি জালাল উদ্দিন তখন ভিকটিমের স্বামীকে পাহারা দেন। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাদের ছত্রছায়ায় মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় স্থানীয় জলদস্যু বাহিনী বালু উত্তোলন, খাস জায়গা দখল, ঘুরতে যাওয়া নারীদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতায় এগুলো কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। এর আগেও একাধিক ঘুরতে নারী মুছারপুর ক্লোজারে ধর্ষণের শিকার হয় বলে জানা যায়।

মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, দুই অভিযুক্তকে তাদের পরিবারের সদস্যরা আটক করেন। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিমের উপস্থিতিতে আসামিদের পরিবারের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুই আসামিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ বুধবার (২১ জুন) বিকেলের দিকে নোয়াখালীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে আসামিরা দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক প্রদান করে। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামিরা হলেন, উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের একরামুল হকের ছেলে রিয়াদ (৩০) ও মুছাপুর ক্লোজারের রেগুলেটর মোড়ের আলা উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮)। তবে এ মামলার প্রধান আসামি মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের নুর নবীর ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫) এখনো পলাতক রয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলম। তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে পুলিশ ধর্ষণ মামলার ২ আসামি ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় আদালতে জবানবন্দি দিতে চাইলে তাদের নোয়াখালীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে হাজির করলে তিনি তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh