টাইটানিক দেখতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া টাইটানের যাত্রী যারা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩, ১১:২১ এএম

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে দেখতে গিয়ে প্রাণ হারানো পাঁচ পর্যটক। ছবি: সংগৃহীত

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে দেখতে গিয়ে প্রাণ হারানো পাঁচ পর্যটক। ছবি: সংগৃহীত

ডুবে যাওয়া টাইটানিক নিয়ে ১০০ বছরের বেশি সময়ের পরও যেন আগ্রহের কমতি নেই মানুষের। গত রবিবার টাইটান নামের একটি সাবমেরিনে চড়ে আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন পাঁচ পর্যটক। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর কথাও জানানো হয়েছে। তাদের সম্পর্কে যেসব তথ্য জানা গেছে।

টাইটানে ছিলেন ৪৮ বছর বয়সী শাহজাদা দাউদ। তিনি পাকিস্তানের একটি ধনী পরিবারের সদস্য। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিষ্ঠিত দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সেবাকাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। তার ছেলে সুলেমান দাউদও ওই সাবমেরিনে ছিলেন। ১৯ বছর বয়সী সুলেমান শিক্ষার্থী।

শাহজাদা দাউদের স্ত্রীর নাম ক্রিস্টিন। তিনি আরেক সন্তান আলিনার সঙ্গে লন্ডনে থাকেন। শাহজাদা পাকিস্তানি বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এনগ্রো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি এসইটিআই নামের একটি ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গবেষণা সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন।

সাবমেরিনটি নিখোঁজ হওয়ার পর শাহজাদার পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি বিভিন্ন প্রাকৃতিক জায়গা নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বাকিংহামে পড়াশোনা করেছেন।

৫৮ বছর বয়সী হ্যামিশ হার্ডিং একজন ব্রিটিশ অভিযাত্রী। বেশ কয়েকবার দক্ষিণ মেরু ঘুরে এসেছেন তিনি।

আমেরিকান ধনকুবের জেফ বেজোসের যাত্রীবাহী মহাকাশযান ব্লু অরিজিনে চড়ে ২০২২ সালে মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন হ্যামিশ হার্ডিং। তার নামের পাশে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রেকর্ডটি হলো-পৃথিবীর গভীরতম স্থান হিসেবে পরিচিত মারিয়ানা ট্রেঞ্চে ডুব দিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় থাকা।

হ্যামিশ হার্ডিংয়ের বেড়ে ওঠা হংকংয়ে। আশির দশকে ক্যামব্রিজে পড়াশোনা করার সময় তিনি বিমান চালনায় দক্ষতা অর্জন করেন। ব্যাংকিং সফটওয়্যারে অর্থ উপার্জন করে নিজের বিমান তৈরির প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

৭৭ বছর বয়সী পল অঁরি নাজোলে ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি। তিনি মি. টাইটানিক নামে পরিচিত। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন নাজোলে।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার দুই বছরের মাথায় ১৯৮৭ সালে প্রথম অভিযানে গিয়েছিলেন পল অঁরি নাজোলে। টাইটানিকের অনেক ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বেশির ভাগের উদ্ধারকাজই তিনি তদারক করেন।

পল অঁরি নাজোলের অধীন টাইটানিকের ‘বিগ পিস’ খ্যাত ২০ টন ওজনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাবমেরিন সরবরাহকারী কোম্পানি ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ (৬১)। তিনি সাবমেরিন টাইটান চালাচ্ছিলেন।

গ্রাহকদের গভীর সমুদ্রের অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য ২০০৯ সালে ওশানগেট প্রতিষ্ঠা করেন স্টকটন রাশ। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখানোর প্রস্তাব দিয়ে ২০২১ সালে প্রচারিত বিজ্ঞাপন বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছিল।

স্টকটন রাশ ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাকাশ প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি নেন। স্নাতক শেষ করার পর ম্যাকডোনেল ডগলাস করপোরেশনে ফ্লাইট টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে চলে যান স্টকটন রাশ। ১৯৮৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (বার্কলে) থেকে এমবিএ ডিগ্রি নেন।

৬১ বছর বয়সী রাশ বলেছিলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন আকাশের চেয়ে সমুদ্র মানুষকে বেঁচে থাকার সেরা সুযোগ দেয়। তিনি আরো বলেন, মানবজাতির ভবিষ্যৎ পানির নিচে, মঙ্গল গ্রহে নয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh