তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ওপরে, আতঙ্কিত তিস্তা পাড়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩, ১২:২২ পিএম

পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি

পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি আবারও বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদী পাড়ে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।  

দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়ার সাথে সাথে নিম্ন অঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি প্রবেশ করায় গবাদি পশু নিয়ে বিপদে আছেন তিস্তা পারের মানুষ।

আজ শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে তিস্তার পানি কমে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।

তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় আবারও লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পরেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর,বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।  রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

চর সিন্দুর্নার মনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তা নদীর পানি রাত থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। চলাচলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।

সিন্দুর্না ইউনিয়নের ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, তিস্তায় গত চারদিন কোন পানি ছিল না, হঠাৎ রাত থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তা পারে মানুষ আমরা আতঙ্কে আছি।

হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, প্রথম দফায় বন্যার পর দ্বিতীয় দফায় গড্ডিমারির পাঁচটি ওয়ার্ডের ঘরবাড়িতে আবারও পানি প্রবেশ করছে। এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তিস্তা পরের লোকজনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে জেলার ৫ উপজেলায় নিম্ন অঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। জরুরি প্রয়োজনসহ যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করায় প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh