দ্যা গার্ডিয়ান বিশ্লেষণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫৬ পিএম
বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে উন্নত দেশগুলোতেও দেখা মিলেছে নানান রকমের জটিলতা। এমনকি বিশ্বের মোড়ল মার্কিন মুল্লুকে একের পর এক ব্যাংকিং খাতে ধস আসার মধ্যদিয়ে এই মন্দার প্রকৃত সত্তা উন্মোচিত হয়েছে পৃথিবীর সকল প্রান্তেই। এমনকি প্রাচ্যের সভ্য জাতি বলে পরিচিত যুক্তরাজ্যেও বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খাদ্যপণ্য ক্রয়ের ওপরেও টানা হয়েছে লাগাম। কেউ চাইলেও এক সপ্তাহে নির্দিষ্ট কোটার বাইরে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কিনতে পারছেন না।
আর এবারে যুক্তরাজ্যের লাখ লাখ নাগরিক তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় বিল এবং খরচ মেটানোর জন্য ক্রেডিট কার্ডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
জোসেফ রাউনট্রি ফাউন্ডেশন (জেআরএফ) প্রকাশিত তথ্যের বরাত দিয়ে রবিবার গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট গভীরস্তরে পৌছায় ব্রিটিশ পরিবারগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেআরএফ বলছে, দেশটির ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন নিম্ন-আয়ের পরিবার ঋণ গ্রহণ করছেন বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা শুরু করেছেন সংকট মুহুর্তে প্রয়োজনীয় বিল মেটাতে।
অন্যদিকে প্রায় ৬ মিলিয়ন নিম্ন-আয়ের পরিবারের অরক্ষিত ঋণের দিকে ঝুঁকছেন, যার মধ্যে ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ওভারড্রাফ্ট, ক্রেডিট ইউনিয়নসহ নানা ব্যক্তিগত ঋণের খাত রয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে বৃটিশ নাগরিকদের মোট ১৪.২ বিলিয়ন পাউন্ড বকেয়া ছিল শুধু ক্রেডিট কার্ড বাবদ। এর মধ্যে ১৮.২ বিলিয়ন পাউন্ডের ঋণের সুদ দাঁড়িয়েছে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত। যা কিনা ব্রিটেনে পরিবার প্রতি বছর হিসাবে প্রায় ৮৬৮ পাউন্ডের সমান।
এদিকে বিল পরিশোধের মাসুল হিসেবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা তাদের পরিবারগুলোকে অর্থপ্রদানের ক্ষেত্রেও রয়েছে পিছিয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতিমধ্যে ২.৮ মিলিয়ন নিম্ন আয়ের পরিবারের ওপর এক সমীক্ষায় জানা যায়- ২০২১ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের মে মাসের মধ্যে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে পরিবারগুলো।
এ প্রসঙ্গে জেআরএফ’র একজন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদের বলেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট একটি বিপজ্জনক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে। এমনকি অর্থনৈতিক দুর্ভোগের এই চরম সময়ে লাখ লাখ নিম্ন-আয়ের পরিবার সুরক্ষিত থাকছে না। তারা ক্রমাআগত এমন ঋণের লাইফলাইনের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন যাতে তাদের আরও গুরুতর বস্তুগত অসুবিধায় পড়তে না হয়। কিন্তু সুদের হারের উর্ধ্বুমুখীতার ফলে ক্রেডিট কার্ডের মত এই বিকল্প পথ কতটা প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম সেটি কিন্তু স্পষ্ট নয়।
সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান