মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১৩ পিএম | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৬:০০ পিএম
জিনাত ফেরদৌস। ছবি: সংগৃহীত
সারা বিশ্বেই বিদেশে জন্ম নেওয়া বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের কদর বাড়ছে, সেখানে গা ভাসিয়েছে বাংলাদেশও। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে প্রবাসী অ্যাথলেটদের পদচারণা এবারই প্রথম নয়। জামাল ভূঁইয়া, তারিক কাজীসহ অনেকেই খেলেছেন। সেই ধারবাহিকতায় এবার নাম লেখাতে চান জিনাত ফেরদৌস, বাংলাদেশের পদক খরা ঘোচানোর পাশাপাশি অলিম্পিক গেমসের মতো আসরে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করাই তার লক্ষ্য।
বড় আশা ও পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন বক্সার জিনাত। বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে ট্রায়াল দিয়ে ফিরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। আগামী এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার লক্ষ্যেই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের কর্মকর্তারা তার পারফরম্যান্স দেখে খুশি হয়েছেন। তবে রিংয়ের বাইরে সমস্যা যা সেটা হলো জিনাতের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে নিজেকে প্রস্তুত করতে ঢাকা ত্যাগ করেছেন জিনাত।
বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘জিনাত ফেরদৌসের বাংলাদেশি পাসপোর্ট না থাকায় নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট পাওয়া গেলে এশিয়ান গেমসের দলে তার থাকা নিয়ে কোনো সন্দেহ আর সংশয় নেই।’
জিনাতের বাবা বেলায়েত হোসেনের বাড়ি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জে আর মা শাহানাজ ফেরদৌসের বাড়ি পাবনা জেলায়। আশির দশকে উন্নত জীবনের বড় স্বপ্ন নিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। নিউইয়র্কে জন্ম জিনাতের এবং সেখানেই বক্সিংয়ে হাতেখড়ি।
বাংলাদেশের বক্সিংয়ে সোনালি দিনের তারকা হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে মোশাররফ হোসেনকে। ১৯৮৬ সালে সবশেষ তার হাত ধরে এশিয়াডে প্রথমবার ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে পদক খরা চলছে। ৩৭ বছর পর এবার ২৯ বছর বয়সী জিনাতের হাত ধরেই বক্সিংয়ে পদক আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিজের ওপর আস্থা রেখে জিনাত বলেন, ‘আমি অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে এবার বাংলাদেশে এসেছি। আসার আগে কী কী করতে পারব এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করে তবেই এসেছি। এবার আমার মা-বাবার দেশকে পদক এনে দেবার লক্ষ্য।’
৫০ কেজি লাইটওয়েট ওজন শ্রেণিতে নিউইয়র্ক রিজিওনের চ্যাম্পিয়ন জিনাত।
এদিকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে প্রবাসীদের দাপট দিন দিন বাড়ছে। ফুটবলে জামাল ভূঁইয়া তো জাতীয় দলের অধিনায়ক গেল পাঁচ বছর ধরে। তারিক কাজী খেলে চলেছেন দাপটের সঙ্গে। ভবিষ্যতে রাহবার ওয়াহেদ খান ফুটবল দলে আসতে পারেন। মেয়েদের ফুটবলে জাপান প্রবাসী মাতসুশিমা সুমাইয়াও এখন আস্থা অর্জন করেছেন। অ্যাথলেটিক্সে ইমরানুর কড় ভরসার নাম হয়ে গেছেন। সাঁতারে জুনাইনা কয়েক বছর খেলে চলে গেলেও আসছেন তার ছোট বোন। জিমন্যাস্টিকসে কাদের খান আসছেন। সব মিলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বড় ভরসার নাম হতে পারে প্রবাসী অ্যাথলেটরা।