নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০২:১৫ পিএম | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৩:১৬ পিএম
বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে কবি মোহাম্মদ রফিককে। ছবি: সংগৃহীত
বাগেরহাটে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে কবি মোহাম্মদ রফিককে। আজ সোমবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১ টায় বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের চিতলী বৈটপুর গ্রামে নিজের গড়া উদ্দীপন বদর-সামছু বিদ্যানিকেতন স্কুলে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
সকালে কবির নিজের গড়া স্কুলে তার মরদেহ রাখা হয়। বৃষ্টির মধ্যেও স্থানীয় গ্রামবাসী, কবির ছাত্র, অনুজ, রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করতে থাকেন। তারা ফুল দিয়ে কবিকে শ্রদ্ধা জানান। জানাজায় গ্রামবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশ নেন।
এর আগে, রবিবার (৬ আগস্ট) রাত একটায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।
১৯৪৩ সালে বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের বৈটপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ রফিকের বাবা সামছুদ্দীন আহমদ এবং মা রেশাতুন নাহার। তাদের আট সন্তানের মধ্যে রফিক ছিলেন সবার বড়।
মোহাম্মদ রফিকের শৈশব কাটে বাগেরহাটে। ম্যাট্রিক পাস করে তিনি ঢাকায় আসেন। ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন ঢাকা কলেজ থেকে। বিএ পাসের পর ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই মোহাম্মদ রফিকের কবি প্রতিভার বিকাশ ঘটে। এসময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। তখন সামরিক আদালতে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীন দেশেও পরে তিনি সামরিক শাসকের রোষের শিকার হয়েছিলেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন রফিক, স্বাধীন বাংলা বেতারেও তিনি কাজ করেন।
স্বাধীনতার পর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন রফিক। ২০০৯ সালে তিনি অবসরে যান।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে কাব্যিক রসদ জুগিয়ে তোলা এই কবিতার জন্য মোহাম্মদ রফিককে সেনানিবাসে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। তার নামে হুলিয়া জারি হয়। তাকে কিছুদিন আত্মগোপন করে থাকতে হয়েছিল।
মোহাম্মদ রফিকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ বৈশাখী পূর্ণিমা প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ধুলোর সংসারে এই মাটি, কীর্তিনাশা, কপিলা, স্বদেশী নিঃশ্বাস তুমিময়, মৎস্যগন্ধা, বিষখালী সন্ধ্যা, কালাপানি, নোনাঝাউ, ত্রয়ী, চিরহরিতের উপবাস। এ ছাড়া বেশকিছু গদ্য ও আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থও লিখেছেন তিনি।
মোহাম্মদ রফিক ২০১০ সালে ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদকে ভূষিত হন। তার আগে ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। এ ছাড়া নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত তিনি।