জাপা নেতার পিস্তল ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ শ্রমিকলীগ সেক্রেটারির বিরুদ্ধে

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:২৫ পিএম

লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালে ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর ও একেএম মুর্তজা আবেদীনের ওপর হামলা ও তার লাইসেন্সকৃত রিবলভার ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্না এবং তার লোকেদের বিরুদ্ধে।

এসময় ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য দুই পক্ষের মধ্য থেকে রিবলভারটি নিজের হেফাজতে নিয়েছেন। এ ঘটনায় কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীনকে হেফাজতে নিয়েছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।

আজ রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর লঞ্চঘাট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

মুর্তজা আবেদীনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ শ্রমিকলীগ নেতা রইজ আহমেদ মান্নার। তার অভিযোগ কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে মুর্তজা আবেদীন গুলি চালানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করেছেন তারা।

মুর্তজা আবেদীন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল জেলা কমিটির আহবায়ক। এছাড়া শ্রমিকলীগের আহবায়ক রইজ আহমেদ মান্না মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেছেন, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীন বলেন, আমার ব্যক্তিগত কাজে লঞ্চঘাট এলাকায় বরিশাল সদর ভূমি অফিসে যাই। এ সময় ভবনের ওপর থেকে দেখতে পাই বরিশাল মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদে মান্না, তার ভাই নাদিম ও মিঠুসহ তাদের ৩০-৪০ জন অনুসারী ভূমি অফিসের সামনে জড়ো হচ্ছে।

আমি তাদের দেখে আমার মোবাইল ফোনের ভিডিও চালু করে ভূমি অফিস থেকে বের হই। বাইরে বের হতেই  ‘শালা আমার বৌয়ের গায়ে তুই হাত দিছো’ বলে মান্না ও তার অনুসারীরা আমার ওপর হামলা চালায় এবং আমার কোমরে থাকা লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চায়। পরে ট্র্যাফিক পুলিশ এসে আমার আগ্নেয়াস্ত্রটি হেফাজতে নেয়।

মুর্তজা আবেদীন বলেন, আমি ২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা ২৭ বছরের কাউন্সিলর। আমি জনপ্রিয় হওয়াই আমার অপরাধ। ইতিপূর্বে সিটি নির্বাচনের আগে মান্না কারাগারে থাকাবস্থায় তার নির্দেশে আমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মামলা করবেন বলে জানান মুর্তজা আবেদীন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রইজ আহমেদ মান্না বলেন, আমাদের জমা-জমির বিষয়ে একটি ঝামেলা ছিল। সেই কাজের জন্য আমি ভূমি অফিসে যাই। কাজ শেষ করে যখন বের হই তখন পাশ থেকে এসে মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করে।

এসময় আমার সঙ্গে আরো ৩-৪ জন ছিল। তারা পুরো বিষয়টি দেখেছে। তারা এবং স্থানীয়রা মুর্তজাকে গুলি করতে বাধা দেয়। পরে স্থানীয় ট্র্যাফিক পুলিশ এসে ওই পিস্তলটি নিয়ে যায় এবং মডেল থানায় ফোন করা হলে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে কোনো মামলা করেছেন কিনা? উত্তরে তিনি বলেন, আমি যেহেতু একটি সংগঠন করি। তাই সিনিয়রদের বিষয়টি জানিয়েছি। অবশ্যই আমি চাই তার শাস্তি হোক।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘ভূমি অফিস থেকে বের হওয়ার পর মুর্তজা ও মান্নার সাথে দেখা হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায় মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করেন। তিনি বৈধ পিস্তলের অবৈধ ব্যবহার করছেন কী-না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আপাতত তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।

রইজ আহমেদ মান্নার বিরুদ্ধে কাউন্সিলরের পিস্তল ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরা এবং অন্যান্য মোবাইল ফোনের ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এতে যেই দোষী হবে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবো। কোন নির্দোষ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে দিকটাতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh