আফরোজা চৈতী
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:১৪ পিএম
প্রতীকী ছবি।
ভালোবাসার এক নীরব ঘাতক অবহেলা। দাম্পত্যে একটা সময় পর সম্পর্কটা বড় বেশি ডালভাত হয়ে যায়। স্বামী ভাবছেন ওর যা দরকার সব তো আমি দিচ্ছিই, আর কী লাগবে? আবার স্ত্রী ভাবছেন, সব তো রান্না করে টেবিলে রেখেই দিয়েছি, নিজের মতো খেয়ে নিক, আমার কেন বসে থাকতে হবে। খুব ছোট ছোট বিষয় যেগুলোকে মোটা দাগে অবহেলাও বলা চলে না। বরং সঙ্গীর প্রতি একটু কম মনোযোগ বলা যায়।
দাম্পত্যে অবহেলা এক ঘুণপোকা। কখন যে চারটা দেয়ালের ঘর নড়বড়ে হয়ে যাবে টেরও পাবেন না। ছোট ছোট মনোযোগ, ভালোবাসা দাম্পত্যকে মজবুত করবে। হয়তো অবহেলা করছেন না, তবে সঙ্গীর মনে হলো সে অবহেলিত হচ্ছে এই অনুভূতিও দাম্পত্যে ভীষণ বাজে প্রভাব পড়ে। এই পৃথিবীর একটি আইন আছে আর সেটা হলো যা দিচ্ছেন সেটাই একদিন ফেরত পাবেন। অবহেলা দিলে অবহেলা, যত্ন নিলে যত্ন। যদি সঙ্গীর সঙ্গে প্রতারণা করেন, মিথ্যা বলেন, এড়িয়ে যান, তবে অপেক্ষা করুন এই সব কিছু ফিরে আসবে।
সম্পর্ক চারাগাছের মতো। যত্ন নেবেন না, পানি-রোদ দেবেন না গাছ নেতিয়ে যাবে। আর দিনের পর দিন অবহেলা করে যাবেন দেখবেন একদিন গাছটিই মরে গেছে। সময় থাকতে যত্ন নিন ভালোবাসার চারাগাছকে। যত ব্যস্ততা থাক প্রিয়জনের স্পর্শে থাকুন। তাকে জানান দিন তার গলার আওয়াজ শুনে দিনটা শুরু না করলে দিনটা খারাপ যায়। তাকে অনুভব করান অন্য কেউ না বরং আপনিই তার একমাত্র অনুপ্রেরণা ভালোবাসা।
জীবনটা খুব ছোট, যার সান্নিধ্য, কথা আজ পাত্তা দিচ্ছেন না, এক সময় তার সঙ্গে কেন সময় কাটাননি তা নিয়ে আফসোস করবেন। একটা সময় মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান, বন্ধু সবাই যার যার জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে দূরে সরে যাবে। যে পাশে থাকবে তিনি জীবনসঙ্গী। তাই তার প্রতি মনোযোগী হন। বোঝার চেষ্টা করুন তার আবেগ। ‘ভালোবাসা’ নামক মিষ্টি শব্দটা লীন হতে দেওয়া যাবে না। দাম্পত্য জীবনে যত্ন করে এই শব্দটা জিইয়ে রাখা খুব দরকার। দিন শেষে একবার একটা খুদে বার্তায় বা মুখে বলা ‘ভালোবাসি’ কিন্তু জাদুর মতো কাজ করে। তাই ভালোবাসার চর্চা আর যত্ন নেওয়া উচিত সব সময়।
মনোবিদরা বলেন, ‘একশ বছর বেঁচে থাকার রসদ পেয়ে যেতে পারেন যদি পাশে একজোড়া মুগ্ধ দৃষ্টি থাকে।’ একজনের প্রতি আর একজনের মুগ্ধদৃষ্টি যেন ধরে রাখতে পারেন শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। মুগ্ধতায় বিনাশ হোক অবহেলার কীটগুলো।