বুড়িমারী বন্দরের শ্রমিক আন্দোলন যৌক্তিক: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বুড়িমারীর শ্রমিকরা তাদের সঠিক অধিকার না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রেখেছে। এ বন্দরের শ্রমিকদের আন্দোলন ও দাবি যৌক্তিক। ট্রেড ইউনিয়নগুলো সঠিকভাবে গঠিত হলে ও কাজ করলে শ্রমিকরা আন্দোলন করার কথা নয়।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর পরির্দশনে এসে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি শ্রমিক গ্রুপ, সরদার গ্রুপ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদেরকে ঠকানো ঠিক হবে না।’ জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। তিনি সাধারণ শ্রমিকদেরকে কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘কোনো কিছুর সমাধান কাজ বন্ধ করে চাইলে হবে না। প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত মনমত না হলে রাজপথ সবার জন্য খোলা আছে।’ 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সময়মত জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ-বিদেশে কোথাও ধর্না দিয়ে কোনো কাজ হবে না। বাংলাদেশ বিজয়ী দেশ। এদেশ কারও কথায় চলবে না। নির্বাচন আয়োজনে কোনো ব্যত্যয় হবে না। ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করলে দেশের জনগণ পদক্ষেপ নিবে। দেশের আইন-আদালত আছে সেভাবেই চলবে। কেউ নির্বাচনে না আসলেও নির্বাচন হবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, জেলা প্রশসাক মোহাম্মদ উল্যাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি রুহুল আমীন বাবুল, পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম, বুড়িমারী স্থল শুল্ক কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আলীম, স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রমুখ। 

ঊল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরির টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদেরকে কাজের সিরিয়াল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল মারে। এতে ১৫ জন আহত হয়। 

ওইদিন থেকেই স্থলবন্দরে শ্রমিকরা, সঠিক মজুরি না দেওয়া, পারিশ্রমিকের কেটে নেওয়া টাকার হিসাব না দেওয়া, নির্বাচনের মাধ্যমে শ্রমিক সংগঠনের কমিটি গঠন না করে স্বজনপ্রীতিসহ নানা বৈষম্যের অভিযোগে শ্রমিক সরদারদের বিচার ও পদত্যাগের দাবিতে পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ রাখে। একই দাবিতে এর আগেও একাধিকবার বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়ক অবরোধ ও ধর্মঘট করে আসছে শ্রমিকরা।

এদিকে, এ ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি ও উপজেলা পুলিশ প্রশাসন সাধারণ শ্রমিকদেরকে নিয়ে দুই দফা বসলেও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় গত ৫ দিন ধরে অচল হয়ে আছে বুড়িমারী স্থলবন্দর।