শামুক-ঝিনুক: অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা

তাহজীবুল আনাম

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৯ পিএম

শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করছেন উপকূলের স্থানীয়রা। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করছেন উপকূলের স্থানীয়রা। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের মূল্যবান সম্পদ শামুক-ঝিনুক। সমুদ্র উপকূলে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে শামুক-ঝিনুকের আবাসস্থল। এসব আবাসস্থল থেকে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে উপকূলের অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহের পথ খুঁজে পেয়েছেন। এতে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে ঝিনুকের চাহিদাও। 

ঝিনুকের খোলস থেকে চুন, অলঙ্কার, গৃহসজ্জার উপকরণ তৈরি, পোলট্রি ও ফিশ ফিড মিলে ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে ব্যবহার এবং ঝিনুকের মাংসল অংশ চিংড়ি, মাছ ও হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশে ঝিনুকের মাংস প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশে সাধারণত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ঝিনুকের মাংস খেয়ে থাকেন।

কক্সবাজারের মহেশখালী, সোনাদিয়া, মাতারবাড়ী, কুতুবদিয়া, উখিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপের অনেক মানুষ ঝিনুক সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

ঝিনুকের মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল ও প্রোটিন। শুধু বিদেশ নয়, দিন দিন বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই খাবার। আজ থেকে ৫ বছর আগেও এক কেজি ঝিনুকের মাংসের দাম ছিল ২৫০-৩০০ টাকা। বর্তমানে এক কেজি ঝিনুকের মাংস ২০০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়াও দাম বেড়েছে ঝিনুকের তৈরি অন্যান্য সামগ্রীর। 

মহেশখালীর ঝিনুক আহরণকারী জমির উদ্দিন বলেন, শামুক-ঝিনুক কুড়িয়ে আমার সংসার চলে। জেটিঘাট ও সমুদ্রের পাশে গাছের শিকড় থেকে ঝিনুক  সংগ্রহ করে থাকি। সাদা ঝিনুক চুন তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এবং অন্য কিছু ঝিনুক থেকে মাংস সংগ্রহ করে বিক্রি করা হয়। প্রতিকেজি ঝিনুকের মাংস ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে পারি।

টেকনাফের ঝিনুক ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন বলেন, সমুদ্র থেকে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে চুন, ঘরের সাজসজ্জার উপাদান ও অলঙ্কার তৈরি করে বিক্রি করি। এ ছাড়াও ঝিনুকের মাংসেরও চাহিদা রয়েছে। 

কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, যুগ যুগ ধরে উপকূলীয় জনসাধারণ শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে আসছে। বিশ্বের অনেক দেশে ঝিনুকের মাংসের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবার হিসেবে খ্যাতি রয়েছে। শুধু মাংস নয়, ঝিনুক থেকে পাওয়া মুক্তাও একটি সম্পদ, যা দিয়ে মূল্যবান অলঙ্কার তৈরি করা হয়। এ ছাড়াও চুন, মাছের খাবার ও ঘরের সাজসজ্জার কাজেও ব্যবহার করা হয় ঝিনুকের উপাদান। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করলে পরিবেশের ক্ষতি হয়। ঘেরে ঝিনুক চাষের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন সম্ভব।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh