সিনিয়র রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:২৩ পিএম
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের প্রভোস্টের স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানানো হয়, ‘আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১ এর ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বিধায় তারা অতিদ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু ও সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা নূরী এই বিজ্ঞপ্তির নিন্দা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, এখানে ‘বিবাহিত ও গর্ভবতী’ ছাত্রীদের প্রতি যে অবমাননাকর ও বৈষম্যমূলক বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিবাহিত হওয়া বা সন্তান ধারণ করা একদিকে নারীর ব্যক্তিগত বিষয়, অন্যদিকে সন্তান ধারণের মধ্য দিয়ে সে সামাজিক দায়িত্বও পালন করে। সেক্ষেত্রে সেই সকল নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করাই কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। আবার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষার্থীর আবাসিক সিট নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত হল নির্মাণের দায়িত্ব বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে নানা রকম বিবেচনা সামনে নিয়ে আসছে। অথচ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বছরের পর বছর ধরে হল উদ্ধার ও নির্মাণের জন্য আন্দোলন করে আসছে।
নেতারা আরও বলেন, সংবিধানের ২৭ নং ধারায় বলা হয়েছে ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান’ এবং ২৮ (১) নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না’ এবং (২) নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন’। তাহলে নারী বিবাহিত এবং গর্ভবতী বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার আবাসিক সিট বাতিল করে সংবিধান বিরোধী ভূমিকাও পালন করছেন। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবিধান বিরোধী ধারা কীভাবে যুক্ত থাকে সেটাও বিবেচনার বিষয়।
নেতারা অবিলম্বে এই বিধিমালা প্রত্যাহার এবং এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে সকল শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক সিট নিশ্চিতের দাবি জানান।