নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০১:১৬ পিএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০১:১৬ পিএম
রাজধানীর তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত
গত ২৬ জুলাই থেকে রাজধানীর তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হয় বিনামূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। নগরবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের এই নতুন উদ্যোগের আওতায় এখানে রোগীরা ওষুধসহ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন বিনা মূল্যে।
বর্তমানে সারা দেশের মধ্যে শুধু তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই বিনা মূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এই সেবা নিতে এখানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগী আসছেন।
কমপ্লেক্সে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে। কমপ্লেক্সটির মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, গত আগস্টে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৬৪৭ রোগী। সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৪৭ জন সেবা নিয়েছেন। অক্টোবরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন, নারী ৭৯৮ জন, শিশু ৩৮৬ জন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পাশেই পরিপাটি, সাজানো-গোছানো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা জানান, একতলা টিনশেড কমপ্লেক্সের সকালের পালার নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ৮টায়। চলে বেলা ২টা পর্যন্ত।
হাসপাতালটির কার্যক্রম পুরোপুরি বহির্বিভাগভিত্তিক (আউটডোর)। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন বহির্বিভাগ চালু থাকে। বহির্বিভাগে নারী, পুরুষ, শিশুদের (৬-১৩ বছর) পৃথকভাবে সাধারণ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। পাশাপাশি গাইনি-প্রসূতি, অসংক্রামক ব্যাধি, অসুস্থ শিশুর (১-৫ বছর) সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা, দন্তরোগ, জরায়ুমুখ-স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং-প্রতিরোধে ভায়া, বিকল্প চিকিৎসাসেবা বহির্বিভাগ থেকে দেওয়া হয়।
হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগ আছে। সপ্তাহের ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগ চালু থাকে।
কমপ্লেক্সটির মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে এখানকার সকালের পালায় বিভিন্ন বিভাগে ১১ হাজার ৪৮৯ রোগী সেবা নিয়েছেন। ১১ হাজার ৭৫৮ রোগী সেবা নিয়েছেন অক্টোবরে। সেপ্টেম্বরে জরুরি বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৬৫১ রোগী। অক্টোবরে ৬১৭ রোগী।
হাসপাতালটিতে পরীক্ষাগারও আছে। এখানে রক্ত-মূত্রের ১৫ ধরনের পরীক্ষা (ল্যাব টেস্ট) করা হয়। হাসপাতালে ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রামের ব্যবস্থা আছে। সব ধরনের পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রাখা হয়।
কর্তৃপক্ষ জানায়, কমপ্লেক্সে বিনা মূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয় বেলা আড়াইটায়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলে। বহির্বিভাগভিত্তিক এই কার্যক্রমে নারী, পুরুষ ও শিশুদের পৃথকভাবে তিনজন চিকিৎসক নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেন। তাঁদের মধ্যে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
সকাল-বিকেল উভয় পালায় রোগীদের কমপ্লেক্সের ওষুধ বিতরণকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০ ধরনের ওষুধ বিনা মূল্যে প্রয়োজন অনুযায়ী দেওয়া হয়। কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে প্রতিবার রোগীদের ৩ থেকে ৫ দিনের ওষুধ দেওয়া হয়। আর ডায়বেটিস, রক্তচাপ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগসহ দীর্ঘমেয়াদি রোগের রোগীদের একবারে দেওয়া হয় এক মাসের ওষুধ।
হাসপাতালটিতে বর্তমানে ২০ চিকিৎসক কর্মরত আছেন। তাঁরা সকাল-বিকেল পালায় রুটিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া নার্স আছেন ১৫ জন। ধাত্রী (মিডওয়াইফ) চারজন। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) ১৯ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক একজন। স্বাস্থ্য সহকারী একজন।