অলিম্পিক গেমস ওয়াইল্ড কার্ডই ভরসা

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

অলম্পিক গেমসে বাংলাদেশ। ফাইল ছবি

অলম্পিক গেমসে বাংলাদেশ। ফাইল ছবি

অলিম্পিক গেমসের শুরু থেকেই বদান্যতার ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে খেলতে হতো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের। সর্বশেষ দুই আসরে এই ধারায় পরিবর্তন আসলেও এবার যেন ফিরে গেছে পুরনো সময়ে। সরাসরি খেলার সুযোগ মেলার সম্ভাবনা প্রায় মিলিয়ে গেছে। সেখানে হতাশার নাম বলতে হবে রোমান সানাকে। টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি খেলা এই আর্চার এবার নেই ওয়াইল্ড কার্ডের তালিকায়ও! মাঝে খারাপ সময় কাটানো রোমানের মতোই হতাশা যেন পুরো ক্রীড়াঙ্গনে।

বছরের হিসেবে ২০২৩ সালটি বাংলাদেশের আর্চারির জন্য বিষাদময় বললে খুব বেশি বাড়িয়ে বলা হবে না। এশিয়ান আর্চারির মিশ্র ইভেন্টে মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে স্বর্ণ জিতেছিলেন দিয়া সিদ্দিকী। সারা বছরে এই একটা সাফল্য দিয়ে বছর শেষ করেছে। যে কারণে সরাসরি কোটা প্লেসের মাধ্যমে অলিম্পিকে খেলার সুযোগ মেলেনি।

সবশেষ হতাশ করেছে শুটিং। এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা আসরে চোখ ছিল প্যারিস অলিম্পিকে। সেখানে ভালো খেলে সুযোগও এসেছিল। খুব কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিলেন শুটার রবিউল ইসলাম রবি। কিন্তু ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। মাত্র ০.৩ স্কোরের ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় অলিম্পিকের কোটা নিশ্চিতের লড়াইয়ে নামা হয়নি দেশের প্রতিশ্রুতিশীল এ শুটারের। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এই আসরটি আবার একই সঙ্গে অলিম্পিকের বাছাই পর্বও ছিল। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৬২৮ স্কোর করেন রবিউল। তাকে পেছনে ফেলে ৬২৮.৩ স্কোর নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেন ইন্দোনেশিয়ার ফাতুহুর। ফাইনাল পর্বে চতুর্থ হয়ে প্যারিস অলিম্পিকে অংশগ্রহণের দারুণ একটা সুযোগও পেয়ে যান। তার সঙ্গে চূড়ান্ত পর্বে খেলা আটজনের মধ্য থেকে অলিম্পিকের টিকিট পেয়ে যান চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের শুটাররা। রবিউল কোটা প্লেসে অলিম্পিকে নাম লেখানোর সুযোগ না পেলেও অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে তার সামনে।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) পাঠানো ছয় জনের তালিকায় রবিউলের জন্য আইওসির কাছে ওয়াইল্ড কার্ড চাওয়া হয়েছে। এশিয়ার সেরা আসরে তার পারফরম্যান্স ওয়াইল্ড কার্ড পেতে সহায়তা করবে।

এদিকে বিওএ প্যারিস অলিম্পিকে চার ডিসিপ্লিনে ৬ ক্রীড়াবিদের নাম ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য আবেদন করেছে। গলফ ও শুটিং থেকে দুজন করে এবং আর্চারি ও বক্সিং থেকে একজনের নাম পাঠানো হয়েছে। শুটিং থেকে শায়রা আরেফিন ও রবিউল ইসলাম, গলফ থেকে সিদ্দিকুর রহমান ও জামাল হোসেন মোল্লা, বক্সিং থেকে মোহাম্মদ সেলিম এবং আর্চারি থেকে হাকিম আহমেদ রুবেলের নাম মনোনীত করা হয়েছে। টোকিও অলিম্পিকে রোমান সানা কোটা প্লেসে আর দিয়া সিদ্দিকী ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে খেলেছিলেন। তাদের দুজনের কাউকেই এবার বিবেচনায় আনা হয়নি।

এই ছয় জনের বাইরে আরও ন্যূনতম ২/৩ জন ক্রীড়াবিদের অলিম্পিকে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতারে ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য অবশ্য বিওএ থেকে আবেদন করতে হয় না। আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতার ফেডারেশন একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের অধিভুক্ত সংস্থাকে খেলার সুযোগ দিয়ে থাকে।

২০১৬ সালে সিদ্দিকুর ও ২০২০ সালে রোমান কোটা প্লেস নিয়ে সরাসরি অলিম্পিকে খেলেছিলেন। এবারের চিত্রটা সে হিসেবে কিছুটা হলেও ভিন্ন বলা যায়। অনেক কম জনসংখ্যার দেশ যখন যোজন যোজন দূরত্বে এগিয়ে যাচ্ছে ও পদক জিতছে, সেখানে বাংলাদেশ পড়ে রয়েছে সেই তিমিরে। শিগগিরই যে উন্নতি হবে সেই সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। অলিম্পিকে তাই ভরসা করুণার ওয়াইল্ড কার্ড।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh