বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
বেনাপোল কাস্টমস হাউস। ছবি: বেনাপোল প্রতিনিধি
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্যাপক কড়াকড়ি ও হয়রানির কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। ফলে কমেছে পণ্য আমদানি। ইতোমধ্যে অনেক আমদানিকারক এই বন্দর দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। প্রতি মাসে গড় লক্ষ্যমাত্রা ৫১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ হিসাবে (জুলাই-অক্টোবর) গত চার মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের চারমাসে ঘাটতি ৩২৮ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ব্যাপক কড়াকড়ি, অনিয়ম ও হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।কতিপয় কর্মকর্তার অনিয়ম ও হয়রানির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাবে সরকারের রাজস্ব আয় কমছে। ব্যবসায়ীদেরও আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে এ বন্দরের বাণিজ্যে আবারও গতি ফিরবে বলে জানান তারা।
সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী জুয়েল রানা বলেন, ভারতের নাসিক থেকে আসা আপেলসহ অন্যান্য উচ্চ পচনশীল ফলের প্রতি কার্টুনে কয়েক কেজি ফল পচে যায়। কিছু ব্যবসায়ীদের ওই পচা ফলেরও রাজস্ব দিতে হয়। যা আগে ছিল না। ফলে বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন আমদানিকারকরা।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আদায়ে বড় ধসের মূল কারণ হলো কাস্টমস হাউসে ডকুমেন্ট সাবমিট করার পর নিচের অফিসারদের অতিরিক্ত হয়রানি। বিশেষ করে ঘোষণা ঠিক থাকলেও পণ্যের এইচএস কোড ও ভ্যালু নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়। এসব কারণে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আদায় কমে গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, রাজস্ব আদায়ে মূলত ঘাটতি হয়েছে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায়। বিশেষ করে মোটরগাড়ি ও মোটর পার্টস থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আপেল আমদানিতে ২৪ কোটি ও ফেব্রিকস আমদানিতে ২১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। মোট ৩২৮ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, কাস্টম কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়াতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে।