চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৩৯ পিএম
হিমেল হাওয়া জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। ছবি: চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গায় টানা ৪৭ দিন নিম্ন তাপমাত্রায় এ জেলার মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ভোরে এ জেলা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া দেখা যায়। সেই সঙ্গে মৃদু শৈতপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। হিমেল হাওয়া জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। ক্রমাগত আবহাওয়া বিপর্যয়ে জেলার সকল কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, গত বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ৩টা ২০ মিনিট হতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে তা এদিন সন্ধ্যা ৬টার পর পর্যন্ত চলে। এসময় পর্যন্ত দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এদিন সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসান চত্বরের পূর্বপাশে এদিন সকালে কাজের জন্য দাঁড়িয়েছিল বেশ ক’জন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কাঁথুলী গ্রামের মরহুম মকছেদের ছেলে তোয়াক্কেল (৫২), একই উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের হানুড়বারাদী গ্রামের মকছেদ আলী মন্ডলের ছেলে কাদের (৫৫) , ওই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মোশারফ (৬১), গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের আকবার বিশ্বাসের ছেলে মহি উদ্দিন (৬০) ও আলমডাঙ্গা উপজেলার আঁইলহাস ইউনিয়নের বলেশ্বরপুর গ্রামের মজহার বিশ্বাসের ছেলে ইউসুফ আলী (৭০) সঙ্গে কথা হয়।
তারা জানান, শীতের কারণে কেউ তাদের কাজে নিচ্ছে না। সে কারণে এক রকম না খেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের দিন কাটছে। তাদের দেখার কেউ নেই। ঠিক অভিন্ন কথা বলে রিকশা চালক রাজ্জাক ও ইলিয়াস এবং খালেক।
তারা জানান, প্রত্যেকদিন সকালে কর্মজীবী মানুষ ও স্কুলে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের পরিবহন করে তারা ভালো রোজগার করতো। কিন্তু শীতের কারণে মানুষ বাড়ি থেকেই বের হচ্ছে না। সে কারণে রিকশা চালিয়ে তাদের রোজগার নেই বললেই চলে।
চুয়াডাঙ্গার বুজরুকগড়গড়ি এলাকায় ইটভাটায় কাজ করছিল কয়েকজন শ্রমিক। তাদের মধ্যে রবজেল, ঈশা ও করিম জানান, যত শীত কুয়াশাই থাকুক না কেন, পরিবারের জন্য তাদের কাজে আসতে হয়েছে। এতদিন শীতের মধ্যে কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। সে কারণে কারর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে তো আর সংসার চলবে না। এ জন্যই কাজে আসা।
চুয়াডাঙ্গার শীত জনিত আবহাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টে দিন যাপন করলেও শুধু কিছু কম্বল দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করা ছাড়া, তাদের খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দেওয়ার ক্ষেত্রে এ যাবত কার্যকর কোন নিরাপদ পদক্ষেপ নিতে পারেনি জেলা বা উপজেলা প্রশাসন। সে কারণে গোটা জেলায় জনজীবন বিষময় হয়ে উঠেছে।