মিয়ানমার ইস্যুতে শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বৈঠক’ ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টার

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৫ পিএম | আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৬ পিএম

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ছবি: সংগৃহীত

সীমান্তে উত্তেজনার জেরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) শতাধিক সদস্য। বাংলাদেশের মাটিতে এসে পড়ছে মর্টারের গোলা। এর আগে সম্প্রতি ভারতেও এভাবে মিয়ানমারের অনেক ৬০০ সেনা প্রবেশ করে। মিয়ানমার ইস্যু নিয়ে এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। 

ভারত সরকারের কয়েকটি সূত্রের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই ভারতের উচ্চপর্যায়ের সফর। তবে এ সফর আনুষ্ঠানিক নয় বলে জানা গেছে। 

সূত্র বলছে, নিরাপত্তা ইস্যুতে আলাপ করতেই বাংলাদেশে এসেছিলেন অজিত দোভাল। আলোচনায় ছিল মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যু। আজ মঙ্গলবার তিনদিনের ভারত সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের। এর আগে বাংলাদেশে এসে ঘুরে গেলেন দোভাল।

আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, গত শনিবার বাংলাদেশে আসেন অজিত দোভাল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। গত রোববার দেশে ফিরে যান তিনি। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে সোমবার মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১১ জন সদস্য অস্ত্রসহ পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন ১১৩ জন বিজিপি সদস্য। পালিয়ে আসা এসব বিজিপি সদস্যকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নিচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। 

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান নেওয়া বিজিপি সদস্যদের মধ্যে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি সীমান্তে থাকা মানুষদের সাবধানে চলাচলের পরামর্শও দিয়েছে বিজিবি। আতঙ্কের কারণে সীমান্তবর্তী বাজারগুলোর সব দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। যারা রয়ে গেছেন তারাও দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্ক নিয়ে।

মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় অংশ পড়েছে বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায়। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধ জোরাল করেছে আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী কয়েকটি গোষ্ঠী। সংঘাত বাড়ার পর সবচেয়ে বেশি গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উলুবনিয়া, তুলাতুলি, কাঞ্জরপাড়া, উখিয়ার পালংখালির আনজুমান পাড়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তে। এতে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে আবার দেখা দিয়েছে উত্তেজনা, বেড়েছে অনুপ্রবেশের শঙ্কা।

এ সংঘাতের কারণে সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। এর মধ্যে সোমবার মিয়ানমার থেকে উড়ে আসা একটি গোলার আঘাতে ঘুমধুম সীমান্তে একজন বাংলাদেশি ও একজন রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের তমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে থাকা দুইটি সীমান্ত চৌকি ইতোমধ্যে বিদ্রোহীগোষ্ঠী দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh