সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দাবি ব্যবসায়ীদের

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

চাল রপ্তানির ব্যবস্থা করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি

চাল রপ্তানির ব্যবস্থা করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে সুগন্ধি আতপ চাল রপ্তানির ব্যবস্থা করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা আতপ চাল ক্রাশিং ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড।

আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌর টাউন হল অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন।

এসময় সমিতির সভাপতি বিনয় কুমার সাহা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে জানায়, শেরপুর জেলার সুগন্ধি চালের জন্য বিখ্যাত। ইতিমধ্যে সুগন্ধি চাল তুলশী মালা ভৌগোলিক নিদর্শক (জিআই) পণ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে। অথচ এই সুগন্ধি চাল ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত চাল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছে না। একদিকে ক্রেতার অভাব অন্যদিকে প্রচুর লোকসান। ক্রেতার অভাবে পুরাতন প্রতি মণ তুলশী মালা চাল ৪ হাজার ৮০০ টাকার স্থলে ৩ হাজার ২০০ টাকায় এবং চিনিগুড়া চাল ৪ হাজার টাকার স্থলে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এরপরেও বাজারে সুগন্ধি চালের চাহিদা নেই। পুরাতন চাল বিক্রি না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা নতুন ধান ক্রয় করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এতে একদিকে ব্যবসায়ীদের প্রচুর লোকসান গুনতে হচ্ছে। অপরদিকে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, করোনাকালীন ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বৈশ্বিক সংকটের কারণে সুগন্ধি চাল ব্যবসায়ীদের লোকসানের মাত্রা এত বেশি ছিল যে তাদের মূলধন অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সংকট কাটিয়ে উঠেছি মাত্র। বর্তমানে প্রতি মণ সুগন্ধি ধান ১ হাজার ৮০০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।

দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন সুগন্ধি চাল উৎপাদন করা হয়, যা দেশের চাহিদার তুলনায় কয়েক লাখ টন বেশি। অথচ দেশের রপ্তানি ১০ হাজার মেট্রিক টনের নিচে। ২০২৩ সালের ৩০ জুন থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ রাখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজার দর স্থিতিশীল রাখতে সুগন্ধি চালের রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আসার পরও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।

তাই আমরা মনে করি, এ বেহাল অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে সুগন্ধি চাল সীমিত পরিসরে বিদেশে রপ্তানি করা। সুগন্ধি চাল রপ্তানির ফলে একদিকে সরকারের কোষাগারে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ হবে অপরদিকে ব্যবসায়ী ও কৃষক সমাজ উপকৃত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন বলেন, আমার জানামতে এমন অনেক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা আতপ চালের ব্যবসায় লোকসান করে পথে বসে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই এখন অটো চালাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছর শেরপুর জেলায় প্রায় ২ লাখ বস্তা সুগন্ধি আতপ চাল বিক্রি না হওয়ায় মজুদ রয়েছে। যা সময় মত বিক্রি না হলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মিয়া কোষাধ্যক্ষ সজীব ঘোষ, নির্বাহী সদস্য সুমন দত্ত সুরেশ দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh