লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
লিপি বেগম ও তার পরিবার। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
বাড়ি ভিটার উপর ড্রেন নির্মাণে বাধা দেওয়ায় লিপি বেগম নামে এক বিধবা নারীসহ পরিবারকে দীর্ঘ ৯ মাস ধরে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী সোলায়মান আলী নামে এক মাতব্বরের বিরুদ্ধে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব দৈলজোর মাস্টার পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। প্রভাবশালী সোলায়মান মাতব্বর স্থানীয় মসজিদের সভাপতি।
জানা গেছে, সরকারি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে পানি নিষ্কাশনের জন্য জোরপূর্বক ওই বিধবা নারীর বসতবাড়ির জমির উপর দিয়ে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা করেন স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বর সোলায়মান আলী ও তার লোকজন। এতে বাধা দেন বিধবা লিপি বেগম। পরে ড্রেন নির্মাণে ব্যর্থ হওয়ায় ওই মাতব্বরের নির্দেশে লিপি ও পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৯ মাসেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনকে আজও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না স্থানীয় মসজিদে। কথা বলতে পারছেন না আশপাশের কারও সঙ্গে। এমনকি মাতব্বরের ভয়ে বিধবা নারীর মুদী দোকান থেকেও কেউ কিনছেন না কোন পণ্য। প্রভাবশালী ওই মাতব্বরের ভয়ে দীর্ঘ ৯ মাসেও মুখ খোলেননি গ্রামের কোন ব্যক্তি।
সম্প্রতি প্রতিবেশীর বিয়ের দাওয়াতে লিপির পরিবারকে দাওয়াত করা হলে মাতব্বরের চাপে সেই দাওয়াতে যাননি কেউ। ফলে একঘরে করার বিষয়টি আরো প্রকাশ্যে আসে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার প্রতিবাদ করলে মাতব্বরের লোকজন ভাংচুর করে তাদের বাড়িঘর।
লিপি বেগমের অভিযোগ, থানায় অভিযোগ করেও মেলেনি কোনো সমাধান।
এদিকে সম্প্রতি থানা পুলিশ ঘটনার তদন্তে আসলে ওই মাতব্বর কৌশলে প্রতিবেশী নারী-পুরুষদের ডেকে এনে পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে। এখন উল্টো ওই মাতব্বর বাদী হয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনের নামে থানায় মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। ফলে দীর্ঘ নয় মাসেও ঘটনার কোন সমাধান হয়নি, থানা পুলিশও নিতে পারেনি কোন ব্যবস্থা।
গ্রাম্য মাতব্বর সোলায়মান আলী জানান, সব জায়গায় আমার লোক আছে। আমি কোন মামলার ভয় পাই না।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, বিষয়ে জানার পর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে অবগত করা হয়েছে।
তবে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা বলতে রাজি নন বলে সাফ জানিয়ে দেন।