নুশরাত জাহান আকন্জী
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
রোজার শেষে আসছে খুশির ঈদ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ আনন্দের বেশিরভাগ জুড়েই থাকে লোভনীয় সব খাবার। তাই স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এই সময়টা একটু সাবধানে খাওয়া দাওয়া করা উচিত। কারণ ঈদের সময় খাবার-দাবারের ভুল থেকে স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হলে পুরো আনন্দটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এখন গরমকাল। সময় ও পুষ্টি বিবেচনায় এই সময় ঈদের খাবার কেমন হওয়া উচিত তা জেনে রাখলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানো যায়।
ঈদের সকালের খাবার : যেহেতু এক মাস একই নিয়মে রোজা রাখার পর ঈদের সকালে প্রথম খেতে হচ্ছে, সেক্ষেত্রে হঠাৎ বেশি খাবার খেয়ে ফেলা ঠিক নয়। পরিমাণে বেশি খেয়ে ফেললে বদহজম, পেটে অস্বস্তি ভাব, পেটে গ্যাস হওয়া ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তার আগে জানা দরকার ঈদের দিন সকালে খাবার মেন্যু কেমন হওয়া উচিত। ঈদের দিন সকালের খাবার মেন্যু যেন একটু হালকা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। এক্ষেত্রে ফিরনি হতে পারে খুব ভালো মেন্যু। দুধ, চাল, গুড় দিয়ে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন ফিরনি যা থেকে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট ও মিনারেলস পাওয়া যায়। দুধের বানানো যেকোন রেসিপি প্রোটিনের পাশাপাশি ক্যালসিয়ামের চাহিদা ও পূরণ করতে পারে। সকালের মেন্যুতে ইচ্ছা করলে ফল বা ফলের জুস রাখা যেতে পারে। এছাড়া তেল ছাড়া পাতলা পরোটা ও সবজিও হতে পারে ভালো মেন্যু। ঈদের দিন সারাদিন অনেক খাবার খেলে ও মেন্যুতে সবজি থাকে না বা কম থাকে। তাই সকালে সবজি খেয়ে নিলে দৈনিক সবজির চাহিদা কিছুটা পূরণ করা যেতে পারে। তবে এ দিন ডিম না খাওয়াই ভালো কেননা এই উৎসবে মাংস খাওয়া হয় বেশি তাই ডিম না খেলে পুষ্টির একটা ব্যালেন্স থাকে।
ঈদের দুপুর : ঈদের দিন দুপুরে খাবারের মেন্যুতে অনেক বেশি আইটেম না রাখাই ভালো। তারচেয়ে বরং দুই থেকে তিনটি পদ ভালোভাবে রান্না করলে পুষ্টি, তৃপ্তি, ক্যালরি সবই পূরণ করা সম্ভব। এ সময় মাংস খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা রোধ করার জন্য মাছের বিভিন্ন আইটেম রাখা যেতে পারে। যেমন মাছের চপ, গ্রিল ফিস, মাছের কাবাব, মাছের কোরমা ইত্যাদি। কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদা পূরণের জন্য দুপুরের মেনুতে রাখতে পারেন সাদা পোলাও বা খিচুড়ি। তবে বিরিয়ানি খেলে সাইড ডিস যেন বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবুজ সালাদ, টক দই অথবা সবজি সালাত মেন্যুতে অবশ্যই রাখুন যাতে ভিটামিন, মিনারেলস পাওয়া যায়।
রাতের খাবার : সারাদিন ভারী খাবার দাবারের কারণে অনেকেই ঈদের দিন রাতে সাদা ভাত, সাথে পাতলা মুরগির ঝোল অল্প পরিমাণে ডাল খেতে পারেন। অথবা অন্যরকম কিছু খেতে চাইলে চাইনিজ আইটেম যেমন চাইনিজ সবজি, চিকেন স্ট্যু ও চিকেন সুপ খেতে পারেন। কারণ এতে তেলের পরিমাণ কম থাকে
এ সমস্ত খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি, ফলের জুস,সরবত ও তরল খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। এর পাশাপাশি ডাব, মালটা, আনারসও লাচ্ছি প্রভৃতি ও পান করা যেতে পারে। এতে হজম সমস্যা কম হবে। আশা করি টিপস গুলো ফলো করলে ঈদের দিনটি সবার আনন্দ কাটবে।
লেখক : নুশরাত জাহান আকন্জী
পুষ্টিবিদ ও ক্লিনিকাল ডায়েটিশিয়ান, বাসাবো হেলথ ও কেয়ার সেন্টার
এবং সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগ, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ