দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সেই নাবিলা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম

কানের কাছে মৃদু স্বরে প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা, আর খাতায় লিখছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন। ফাইল ছবি

কানের কাছে মৃদু স্বরে প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা, আর খাতায় লিখছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন। ফাইল ছবি

এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন লালমনিরহাটের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম (১৮)। গতকাল রবিবার (১২মে) ফলাফলে জিপিএ-৩.৮৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় নাবিলা।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন লালমনিরহাট শহরের চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে  নাবিলা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি লেখাপড়া শেষ করে তার মা খন্দকার ফারজানা আফরিনের মতো শিক্ষক হতে চান। পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চাও করতে চান।

নাবিলা তাবাসসুম শ্রুতলিখন পদ্ধতিতে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট বেশি দেওয়া হয়। পরীক্ষার হলে শ্রুতলিখনে তাকে সহায়তা করেছে জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন। পরীক্ষার হলে নাবিলা মৃদু কণ্ঠে প্রশ্নের উত্তরগুলো বলে দিতো আর স্কুল ছাত্রী রহিমা সেই উত্তর শুনে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়েছেন।

এদিকে পরীক্ষার ফলাফল শুনে স্কুল ছাত্রী রহিমা খাতুন বলেন, নাবিলা আপু জিপিএ ৩.৮৯ পেয়েছে জেনে আমি খুশি হয়েছি। একজন মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে শ্রুতলিখন পদ্ধতিতে পরীক্ষার হলে সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত।

জানা গেছে, নাবিলা তাবাসসুম ১০ বছরের বেশি সময় ধরে লালমনিরহাট শহরের পাশে হাঁড়িভাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি সংস্থা আরডিআর পরিচালিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। 

ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রটির অ্যাডমিন অ্যান্ড আউটরিচ অফিসার প্রদীপ কুমার রায় বলেন, শুধু পড়াশোনায় নয়, অদম্য মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খন্দকার নাবিলা কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চাও সুনাম রয়েছে।

নাবিলা তাবাসসুম বলেন, আমার দুচোখে আলো নেই। শিক্ষা ও সংগীতের মাধ্যমে আমার অন্তরের আলোয় আলোকিত হতে চাই। আমি সাধ্য মতো সেই চেষ্টাই করছি।

নাবিলার মা স্কুল শিক্ষিকা ফারজানা আফরিন বলেন, আমার মেয়ে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এই সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি আরও সামনে এগিয়ে যেতে চান। আমার মতো শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চান। আমরা নাবিলার জন্য গর্বিত। 

সরকারি চাকরিজীবী বাবা আল এমরান খন্দকার বলেন, মেয়ের এই সাফল্যে পরিবারের সবাই আনন্দিত। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh