মুন্সীগঞ্জে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪, ০১:৪৪ পিএম

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টাকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের ফটক বন্ধ।

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টাকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের ফটক বন্ধ।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোটের তথ্য যাচাইয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টাকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের ফটক বন্ধ করে সাংবাদিককে বাধা প্রদানের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা সংবাদ সংগ্রহের কাজে বাধাদানকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আরাফাত রায়হান সাকিব।

গতকাল বুধবার (২৩ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপজেলা নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের কার্যালয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সাংবাদিকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার নির্বাচন চলাকালে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লৌহজং উপজেলার পিংরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযোগকারীসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে এ ঘটনা ঘটে। প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর কেন্দ্রে থাকা পুলিশের ইনচার্জ রতন ও আনসার সদস্যদের দিয়ে কেন্দ্রের ফটক সাংবাদিকদের জন্য বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মিজানুর লৌহজং উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

অভিযোগে আরাফাত রায়হান উল্লেখ করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রদত্ত সাংবাদিক কার্ড ও প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে অংশ নেন। দুপুরে পিংরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের জালভোট দেওয়ার অভিযোগে উপজেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল ও একটি গাড়ি ভাংচুরের খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাই। কেন্দ্রে গিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। এসময় বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য সেখানে অবস্থান করলে হঠাৎ প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর কেন্দ্রের ভিতর ১০মিনিটের বেশি অবস্থান করা যাবে না বলে আইনের কথা বলে  কেন্দ্র ছাড়তে বলেন। পরে আবারো এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের বক্তব্য নিতে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর আহসান চৌধুরী কেন্দ্রে পুলিশের ইনচার্জ রতন ও আনসার সদস্যদের দিয়ে কেন্দ্রের ফটক সাংবাদিকদের জন্য বন্ধ করে দেয়। এসময় তিনি আর কোন সাংবাদিক কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না বলেন। 

আরাফাত আরো উল্লেখ্য করেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কক্ষের ভিতর ১০মিনিট থাকা যাবে না। মূলত কক্ষকে কেন্দ্র দাবি করে আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ সংগ্রহে আমাদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, যা নির্বাচন কমিশনের আইনের লঙ্ঘন। বাধাদানের মাধ্যমে স্বাধীন গণমাধ্যমের অধিকার খর্ব করা হয়েছে উল্লেখ্য করে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে পিংরাইল কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর আহসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণে বলা হয়েছে একজন সাংবাদিক ১০মিনিট থাকতে পারবে কেন্দ্রে। ওই সাংবাদিক ১০মিনিট ছিল, পরে তাকে বলার পর তিনি গেইটের বাইরে গিয়ে আবার আসতে চাইছিলেন। কোথায় প্রশিক্ষণে সাংবাদিকদের ১০মিনিট কেন্দ্রে থাকার নিয়ম এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনার আরো কথা থাকলে আপনি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল আলম বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের কার্ড দেওয়া হয়েছে সংবাদ সংগ্রহে কাজ করার জন্য।  কেন্দ্রে যেকোনো সময় প্রবেশ করতে পারবে। ওই প্রিজাইডিং অফিসারের এমন কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুজন হায়দার জনি বলেন, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে প্রবেশের এমন কাজ একজন প্রিজাইডিং অফিসার করতে পারে না। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করার পায়তারা বলে মনে করছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh