আফসার হোসেন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
বাংলাদেশ দল। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের যৌথ আয়োজনে চলমান আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের পথচলা। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে ফের ব্যাকফুটে টাইগাররা।
ডালাসে শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেট ১৯ ওভারে ৮ উইকেট খুইয়ে পেরিয়েছে বাংলাদেশ। নাসাউয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ১১৩ রানের জবাবে ১০৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। দুটি ম্যাচেই টপ অর্ডারদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান পাননি সৌম্য সরকার। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসানও ৬ বলে ৩ রানে বিদায় নেন।
দ্বিতীয় ম্যাচে তানজিদের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটি বাঁধেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দৃশ্যপট বদলায়নি। তানজিদ ৯ বলে ৯ আর শান্ত ১৪ রান করতে খেলেছেন ২৩টি বল! সাকিব আল হাসান দুই ম্যাচে ১৮ বলে করেছেন ১১ রান। লিটন দাস লঙ্কানদের সঙ্গে ৩৮ বলে ৩৬ রান করলেও ব্যর্থ হয়েছেন প্রোটিয়াদের বিপক্ষে (১৩ বলে ৯)। নিউইয়র্কের নাসাউয়ের ‘পিচ’কে বলা হচ্ছে ব্যাটারদের বধ্যভূমি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নাসাউয়ের উইকেটকে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ‘অজুহাত’ হিসেবে দাঁড় করাতে পারেন। কিন্তু তাতে দায় এড়াতে পারবেন না। বাংলাদেশের টপ অর্ডার নিজেদের উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছে বললেও ভুল হবে না। আর দুই ম্যাচে তাওহিদ হৃদয়ের ২০ বলে ৪০ এবং ৩৪ বলে ৩৭ রান পিচের অজুহাতকে পাত্তা দিচ্ছে না।
আশার কথা, বাংলাদেশের বোলাররা ছন্দে রয়েছেন। তাসকিন, রিশাদ, তানজিমরা দুই ম্যাচে চারটি করে উইকেট পেয়েছেন। তিন উইকেট মোস্তাফিজের নামের পাশে। ক্রিকেট শুধু বোলারদের খেলা নয়। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে কানাডার ছুড়ে দেয়া ১৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায়। অথচ একই মাঠে শ্রীলঙ্কার স্বল্প পুঁজিকে পেরোতে খাবি খেয়েছে টাইগাররা।
যুক্তরাষ্ট্রের কথা না বললেই না। ইতোমধ্যে কানাডা আর পাকিস্তানকে হারিয়ে সুপার এইটে নাম লেখাবার পথে তারা। অথচ দেশটিতে ক্রিকেট সংস্কৃতি বলে কিছু নেই। সেখানে ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করে ঝুঁকি নিয়েছে আইসিসি। আপাতত মার্কিনিদের পারফর্ম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন মুল্লুকের ‘পিচ’ নিয়ে। নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামের অপরিপক্ব ‘ড্রপ-ইন’ পিচে অতিরিক্ত বাউন্সের ফলে বিপজ্জনকভাবে বল আঘাত করছে ব্যাটারদের। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জশ লিটলের বলে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। সেই লিটলের বলেই রিশভ পন্ত কনুইয়ে চোট পান। কোনো ম্যাচেই নাসাউয়ের পিচে ব্যাটাররা স্বস্তিতে ব্যাট করতে পারেনি।
ফেরা যাক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের দুই ম্যাচ বাকি হল্যান্ড আর নেপালের বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি জিতলে বাংলাদেশ কোনো হিসাব ছাড়াই উঠে যাবে সুপার এইটে। একটি ম্যাচ জিতলেও হয়তো নানা সমীকরণে সম্ভাবনা থাকবে। শক্তির বিচারে দুটি ম্যাচেই জেতা উচিত টাইগারদের। আর বাংলাদেশের প্রত্যাশিত সাফল্যের জন্য টপ অর্ডারদের জ্বলে ওঠার কোনো বিকল্প নেই-এটাও ধ্রুব সত্য।