কোরবানির প্রস্তুতি

লোকমান হাওলাদার

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ০৮:২৭ পিএম

কোরবানির জন্য পশুর যত্ন। ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির জন্য পশুর যত্ন। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহায় ব্যস্ততার পুরোটাই থাকে পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে। কোরবানি যেমন নিয়মমাফিক করতে হয়, তেমনি আছে আরও কিছু জরুরি কাজ। জানা যাক, সেগুলো কী কী-

কোরবানির জন্য পশুর যত্ন

কোরবানির জন্য কেনা পশুকে বাসায় এনেই পানি খাওয়ান। তার জন্য শুষ্ক ও খোলা জায়গা বাছাই করুন। খাবার হিসেবে খড়, দানাদার খাদ্য, যেমন-কুঁড়া, গমের ভুসি, ছোলাভাঙা, ভাতের মাড়, চিটাগুড় বেছে নিন। ছাগলের জন্য কাঁঠালপাতাসহ অন্য পাতা ও দানাদার খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারেন। পশু এমন স্থানে বাঁধুন যেন পথচারীদের কষ্ট না হয়। খাবার দিলে খাচ্ছে কিনা, সক্রিয় ও চঞ্চল কিনা সে বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। অসুস্থতা দেখা দিলে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

জবাইয়ের প্রস্তুতি

মাংস কাটার জন্য ধারালো ছুরি, বঁটি ও অন্য সামগ্রীগুলোতে এখনই ধার করিয়ে, পরিষ্কার করে রাখুন। যেন ঈদের দিন সহজে ব্যবহার করা যায়। নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে জবাই করার জন্য সক্ষম না হলে মুসলমান ব্যক্তিকে নির্বাচিত করুন। কোরবানির জন্য দক্ষ কসাই পাওয়াটা বেশ দুষ্কর হয়ে গেছে। তাই আগে থেকেই কসাইয়ের সঙ্গে কথা বলে দরদাম ও সময় ঠিক করে নিতে হবে।

আগের রাতে

কোরবানির আগে পশুকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কোরবানির আগের রাত ১০টার পর থেকে পশুকে খাদ্য খাওয়ানো যাবে না। তবে পানি বা তরল খাবার খাওয়াতে পারেন। এতে চামড়া ছাড়ানো সহজ হবে।

স্থান নির্বাচন

বিচ্ছিন্ন স্থানে কোরবানি না দিয়ে বেশ কয়েকজন মিলে এক স্থানে কোরবানি করা ভালো। কোরবানির জায়গাটি যেন খোলামেলা হয়। রাস্তার কাছাকাছি হলে বর্জ্যরে গাড়ি পৌঁছানো সহজ হবে। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

পশু জবাইয়ের কাজে বড় ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ধারালো মাথা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। কোরবানির সময় পশুকে রশি দিয়ে বেঁধে শোয়াতে হবে। এমনভাবে রাখতে হবে যাতে বেশি কষ্ট না পায়। কোরবানি করার সময় পশুকে পশুর বাম কাতে শোয়াতে হবে। সে সময় পশুর পাগুলো পশ্চিম দিকে থাকবে।

পশুর ধমনি যাতে পুরোপুরি কাটা যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। জবাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে মাংস কাটা হলে ভেতরে রক্ত থেকে যাবে। সম্ভব হলে জবাই করার স্থানটিতে ঠিক গলার নিচে গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে পশুর রক্ত ঝরাতে হবে। এমনভাবে পশুকে রাখতে হবে যাতে গর্তে সম্পূর্ণ রক্ত ঝরে পড়ে। জবাই করার পর পশুকে ওই স্থান থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে চামড়া ছড়াতে হবে। সঠিকভাবে পশুর চামড়া ছাড়াতে পারলে এর ন্যায্য দাম পাওয়া যায়। জবাই করা, মাংস বানানো অথবা কোরবানি সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে যারা সহযোগিতা করেছে-তার বিনিময়ে পশুর কোনো অংশ তাদেরকে দেওয়া যাবে না। নগদ অর্থ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে তাদের পাওনা পরিশোধ করুন।

স্বাস্থ্যবিধি পালন

কোরবানির পর পশুর রক্ত ও তরল বর্জ্য খোলা স্থানে রাখা যাবে না। এগুলো সিটি করপোরেশনের গাড়িতে বা গর্তের ভেতরে পুঁতে মাটিচাপা দিতে হবে। কারণ রক্ত আর নাড়িভুঁড়ি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর যদি রক্ত মাটি থেকে সরানো সম্ভব না হয়, তাহলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যাতে পরিবেশ সুন্দর থাকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh