এবার সাদিক এগ্রো বয়কটের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম

ছবি কোলাজ : সাম্প্রতিক দেশকাল

ছবি কোলাজ : সাম্প্রতিক দেশকাল

দেশের অন্যতম বৃহৎ এগ্রো ফার্ম হিসেবে পরিচিত সাদিক এগ্রো বয়কটের ডাক হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গরুকে বংশ মর্যাদায় এগিয়ে রেখে কোটি টাকা দাম হাঁকা এবং একটি ছাগলের দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়ায় তোপের মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাম্প্রতিক কথাবার্তা ও গরুর দাম নিয়ে চলছে সমালোচনা।

ঘটনার সূত্রপাত কোটি টাকা দামের গরু নিয়ে। মার্কিন প্রজাতির এক গরুকে বংশ মর্যাদায় এগিয়ে রেখে দাম হাঁকা হয়েছে এক কোটি টাকা। গরুর গলায় দেওয়া হয়েছে সোনার চেইন। গরু কিনলে ক্রেতা পাবেন সেই চেইন। কোরবানির বাজারে এ ধরনের ঘটনা বিরল। উচ্চ বংশের গরু বলে দাম বেশি, বিক্রেতার এমন মন্তব্যের সমালোচনা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

এরপর দেশের সবচেয়ে বড় আকারের ছাগল আখ্যা দিয়ে সেটার দাম ১৫ লাখ টাকা হাঁকে সাদিক এগ্রো। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার একজন ক্রেতা সে দামেই ছাগলটি কিনে নেন। এ নিয়েও হয় সমালোচনা।

২০১৬ সাল থেকে দেশে ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ। তবে সে নিয়ম যেন সাদিক এগ্রোর জন্য নয়। প্রতি বছরই প্রতিষ্ঠানটির খামারে দেখা যায় বিশালদেহী ব্রাহামা। এবার ৩টি ব্রাহামা জাতের গরু ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. ইমরান হোসেন নিজেই জানিয়েছেন। 

কেউ কেউ সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের গরুর বংশ মর্যাদা নিয়ে আলোচনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করছেন। কেউ আবার ব্যঙ্গ করেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

একজন ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, গরু কিনতে গেলাম সাদিক এগ্রোতে। সাদিক সাহেব একটা গরু দেখিয়ে দাম হাঁকাল ২০ লাখ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এত দাম কেন, এই গরু তো ৩ লাখের বেশি হওয়ার কথা না। বলল এটা খুব উঁচু বংশের গরু। আমি হাসি দিয়ে বললাম—এটা আবার কেমন উঁচু বংশ? এরপর সাদিক সাহেব ডিরেক্ট অপমান করে বললেন, এটা এত উঁচু বংশের যে এই গরু যদি মুখ ফুটে কথা বলতে জানত, তাহলে আপনার মতো ছোটলোকের সাথে কথাই বলত না!

ওই পোস্টে ইনান আহমেদ খান নামে একজন মন্তব্য করেন। লিখেন, এই লোকের কারণে মধ্যবিত্তের গরু কেনা মুশকিল হয়ে যাবে। একই প্রোডাক্টে দামে বেহুদা ভেরাইটি আসা উচিত না। এখন সবাই দাম বাড়িয়ে দেবে।

জিনাত রেহানা নামে আরেকজন মন্তব্যে লিখেন, ইনি ওনার গরুকে সোনা, রুপা, হিরার খাবার খাওয়ায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সামাজিক প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিত উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব) পেজে এক পোস্টে লেখা হয়, একটি গরু ১ কোটি ২ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয়/বিক্রয় করে কে বা কারা? তাদের আয়ের উৎসটা একটু তদন্ত করা উচিত। সাদিক এগ্রো নিয়ে আপনাদের মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সবার আওয়াজ তোলা উচিত।

ওই পোস্টের মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন নামে একজন লিখেন, বাংলাদেশে গরুর দাম চড়া হওয়ার পেছনে এদের শক্তিশালী হাত কাজ করছে। এদের ফার্মে দেশি গরু ঢুকলে সেটাও প্রিমিয়াম কাউ হয়ে যায়। প্রান্তিক খামারিদের বাঁচাতে হলে এদের লাগাম টানা সময়ের দাবি!

সাদিক এগ্রোর এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে নেটিজেনদের। ‘বয়কট সাদিক এগ্রো’ নামে হ্যাশট্যাগও বানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh