তিস্তায় নৌকাডুবি: একই পরিবারের ৬ জন নিখোঁজ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৭:৫৮ পিএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ০৮:৫৯ পিএম

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলসহ নদীর ভাটিতে ব্যাপক অনুসন্ধান চালান। ছবি: সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলসহ নদীর ভাটিতে ব্যাপক অনুসন্ধান চালান। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনায় একই পরিবারের চার শিশুসহ এখনও ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে ২৬ আরোহী নিয়ে বুধবার নৌকাটি ডুবে যায়। পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়ে নদীর পাড়ে বসে বিলাপ করতে দেখা গেছে সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধ চাঁদ মিয়াকে।  

আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ভোর থেকে উদ্ধার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে তা শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলসহ নদীর ভাটিতে ব্যাপক অনুসন্ধান চালান। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, নৌকাডুবির ঘটনাস্থলের আশপাশে কোন মরদেহ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।  বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় উলিপুরের বজরার সাদুয়া দামার হাট ঘাট থেকে ২৫ যাত্রী নিয়ে শ্যালোচালিত নৌকাটি বিয়ের দাওয়াতে পীরগাছার থিম পার্ক এলাকায় যাওয়ার জন্য রওনা করে। ঘাট থেকে একটু দূরে গিয়েই স্রোতের কারণে এটি ডুবে যায়। এ সময় তীরে থাকা স্থানীয়রা ১৮ জনকে উদ্ধার করেন। পরে আয়শা নামের দুই বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

তবে এখনও নিখোজ আছেন একই পরিবারের চার শিশু ও নারীসহ ছয়জন। তারা হলেন, পুরাতন বজরা গ্রামের চাঁদ মিয়ার ছেলে আনিছুর রহমান (৩২), তার স্ত্রী রুপালী বেগম (২৫), মেয়ে আইরিন বেগম (৯), বোন ইরামনি (১০), ভাগ্নি কুলছুর বেগম (৩) ও ভাতিজা শামিম মিয়া (৮)। মৃত আয়শা নিখোঁজ আনিছুর রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেনু আন্জুয়ারা (৪৫), রাশেদা বেগম (৪৮), শরিফা বেগম (২৫) ও চায়না বেগম (২৪)। 

পরিবারের সবাইকে হারিয়েছেন চাঁদ মিয়া (৭০)। আহাজারি করে তিনি বলেন, তিনি যেতে বাধা দিয়েছিলেন। কেউ তার কথা শুনেনি। তার সব শেষ হয়ে গেল। নদী পাড়ে বসে বিলাপের সুরে তিনি বলছেন, ‘আমার ছেলে ও পরিবারকে ফিরি দাও।’

ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ, জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, ইউএনও আতাউর রহমান ও ওসি গোলাম মর্ত্তুজা। 

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজদের সন্ধান পেতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। মৃতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

বৈরী আবহাওয়ার কারণে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার আবারও উদ্ধার অভিযান চলবে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh