কুষ্টিয়ার চরাঞ্চলে বেড়েছে বাদাম চাষ, ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষকদের

এসএম জামাল, কুষ্টিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১১:২৫ এএম

পদ্মার অনাবাদী চরে বাদাম চাষ। ছবি: কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

পদ্মার অনাবাদী চরে বাদাম চাষ। ছবি: কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বৈরী আবহাওয়ার পরও পদ্মার অনাবাদী চরে চিনাবাদাম চাষ করে এবছরও সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের চাষিরা। 

পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে চাষ করা সোনালী ফসল বাদাম ঘরে তুলে তা বিক্রি করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অর্থকরী এ ফসল চাষ করে চরবাসীর আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে। 

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গেল রবি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় প্রায় ১ হাজার ১০৫ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন খরিফ মৌসুমে ৮৩২ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে দৌলতপুরের বিস্তীর্ণ চরে চাষ হয়েছে ৭৫০হেক্টর জমিতে। 

এক সময় পদ্মা নদীতে জেগে উঠা বালুচর পড়ে থাকতো। যা চরবাসীর কোন কাজেই আসতো না। জেগে উঠা পদ্মার চরে চাষিরা চিনা বাদাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় প্রতি বছরই চাষিদের বাদাম চাষ আগ্রহ বাড়ছে। এবছরও চরে বাদাম চাষ করে চাষিরা সাফল্য পাচ্ছেন। 

তবে অতিরিক্ত খরার কারণে সেচ দিয়ে বাদাম চাষ করতে গিয়ে চাষিদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে চাষিদের লাভের অংক দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিঘা প্রতি চাষিদের খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় বাদামের ফলন হচ্ছে ৭ মন থেকে ৮ মন। আর বিক্রয় হচ্ছে প্রতি মন ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দরে। স্বল্প পরিশ্রমে মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা বাদাম চাষে চরম খুশি। 

দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ এলাকার বাদাম চাষি আব্দুল জাব্বার জানান, এবছর চরে বাদাম চাষে খরচ বেড়েছে। অতিরিক্ত খরার কারণে সেচ দিয়ে বাদাম চাষ করতে হয়েছে। তারপরও বিঘা প্রতি ৭/৮ মন হারে বাদাম হচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে লাভ হচ্ছে উৎপাদন খরচের প্রায় দ্বিগুণ। 

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, ক্ষেতে বাদাম ঝরিয়ে শ্রমজীবীদেরও আয় বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষেত থেকে বাদাম ঝরিয়ে ৫০০ টাকা বা তারও বেশি আয় হচ্ছে শ্রমিকদের। 

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে বাদামের নতুন জাত সরবরাহ সহ প্রণোদনা ও কারিগরি পরামর্শ প্রদান এবং সবধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। ফলে বৈরী আবহাওয়ার পরও বাদাম চাষে চাষিরা এবছরও সাফল্য পেয়েছেন। চরাঞ্চলে পড়ে থাকা অনাবাদী জমিতে অর্থকরী ফসল বাদাম চাষ সম্প্রসারিত হলে চরবাসীর সচ্ছলতা বাড়বে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh