আলী আমজদের ঘড়ি

জাফর খান

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম

আলী আমজদের ঘড়ি। ছবি: সংগৃহীত

আলী আমজদের ঘড়ি। ছবি: সংগৃহীত

পর্যটক নগরী হিসেবে সিলেটের সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে রয়েছে দেশব্যাপী। আর জেলার সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত আলী আমজদের ঘড়ি ১৪৫ বছর ধরে পর্যটকদের জন্য অন্যতম এক আকর্ষণীয় স্থাপনা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার আলী আহমদ খান ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে কিনব্রিজের পাশে এই ঐতিহাসিক ঘড়িঘর নির্মাণ করেন। 

এই ঘড়িঘরের উচ্চতা ২৬ ফুট। আর ঘড়িটির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি। নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত উচ্চতা ১৩ ফুট, ছাদ থেকে ঘড়ি অংশের উচ্চতা ৭ ফুট, ঘড়ির ওপরের অংশের উচ্চতা ৬ ফুট। মোট উচ্চতা ২৬ ফুট। ঘড়িটির ডায়ামিটার আড়াই ফুট এবং ঘড়ির কাঁটা দুই ফুট লম্বা।

ঊনবিংশ শতকে নির্মাণের মধ্য দিয়ে সিলেটের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার খ্যাতি অর্জন করে ঘড়িটি। আলী আহমদ খানের ছেলের নামানুসারে ঘড়িঘরটি আলী আমজদের ঘড়ি নামে পরিচিতি লাভ করেছে। লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিন দিয়ে তৈরি বিশালাকার 

গম্বুজাকৃতির আলী আমজদের ঘড়িটির নান্দনিক স্থাপনা ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করে চলেছে শতাব্দীরও বেশি সময়কাল ধরে। 

নবাব আলী আমজদ খান (১৭ নভেম্বর ১৮৭১-৩০ জুন ১৯০৫) ছিলেন বৃহত্তর সিলেটের অন্যতম প্রতাপশালী জমিদার। বাবা নবাব আলী আহমেদ খানের মৃত্যুর পর ১৮৭৪ সালে তিনি পৃত্থিমপাশার জমিদারিত্ব লাভ করেন। একাধারে একজন প্রসিদ্ধ মানবহিতৈষী জমিদার, সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ হিসেবে তার সুখ্যাতি ছিল চারদিকে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাচীন এই ঘড়িঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ঘড়িটি সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সিটি করপোরেশন ঘড়িটি পুনরায় সচল করে। 

নগরের সুরমা নদীর পাড় আর সারদা হলের মাঝখানে শহরের জিরো পয়েন্ট। আর তার ঠিক ১০০ মিটারের মধ্যেই আলী আমজদের ঘড়ির অবস্থান। কিনব্রিজ পার হয়ে শহরের উত্তর অংশের ঠিক প্রবেশমুখে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে এটি ১৮৭৪ সাল থেকে। ওই বছর তৎকালীন বড়লাট লর্ড নর্থব্রুক সিলেটে সফরে এসেছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন স্বরূপ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার নবাব আলী আহমদ খানের হাত ধরেই ঘড়িটি নির্মিত হয়। ভারতের দিল্লির চাঁদনী চক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নবাব ঘড়িটি স্থাপনে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলে ইতিহাসবেত্তাদের তথ্যে উঠে এসেছে। যা এখনো সিলেটবাসীদের জন্য একটি গর্বের স্থাপনা। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh