সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০১:১৩ পিএম
ধামরাই থানা। ছবি: সাভার প্রতিনিধি
ঢাকার ধামরাইয়ে মহাসড়কে অবরোধ করে গাড়ির গতিরোধ ও গাড়ি জ্বালাও পোড়াও করেছে দাবি করে বিএনপির ৭৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ আরো অনেকে জড়িত রয়েছে জানিয়ে মামলা করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত এ মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারদের বিস্তারিত নাম পরিচয় জানা যায়নি।
গত ২৩ জুলাই ধামরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পাবেল মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি (নম্বর- ৩) করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালনকালে গত ২২ জুলাই বেলা ১২টা ১৫ এর দিকে ওই এসআই জানতে পারেন কালামপুর বাসস্ট্যান্ডের ২০০ গজ পূর্বে এমআরএকে ব্রিক ফিল্ডের উত্তর পাশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সুইচ গেটের সামনে বিএনপি-জামায়াত, শিবিরসহ অন্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাড়ির গতিরোধ করে জ্বালাও পোড়াও করে আতঙ্ক তৈরি করছে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মামলায় উল্লেখিত উপস্থিত আসামিদের মৌখিকভাবে সরে যেতে বললে তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। একপর্যায়ে সহায়তা চেয়ে থানা পুলিশের ওসিকে খবর দিলে সেখানে থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত হন।
এতে আরো বলা হয়, ঘটনাস্থলে এসে তাদের সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা আরো বেশি ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে পুলিশের দিকে। একপর্যায়ে তারা সেখানে ককটেল বিস্ফোরণও ঘটায়। এসময় পুলিশ তাদের দিকে ১১ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়লে আসামিরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় সেখান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অবিস্ফোরিত ককটেল, বিস্ফোরিত ককটেলের পাঁচটি স্প্লিন্টার, দশ টুকরা ইটের ভাঙা অংশ, সাতটি বাঁশের লাঠি, ছয় টুকরা ভাঙা কাঁচ উদ্ধার করা হয়।
এ সংঘর্ষে পুলিশের দুই কর্মকর্তা আহত হন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। আহতরা হলেন- কনস্টেবল মো. আলম হোসেন ও মহিউদ্দিন।
ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন- ধামরাই উপজেলার ইকুরিয়া এলাকার মিকাইল আহম্মেদ (৪৪), চৌদালিপাড়ার দেলোয়ার হোসেন (৫৩) ও গোয়ারিপাড়ার মো. মুর্তুজা (৪৮)।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ধামরাই উপজেলার আইঙ্গন এলাকার তমিজ উদ্দিন (৬৫), কালামপুরের ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ (৪৫), ছয়বাড়িয়া এলাকার মারুফ শিকদার (৪৩), ইশতিয়াক আহমেদ ফারুক (৪০), সুরুজ বাঙালি (৪০), রোমান শিকদার (৩৮), শরীফবাগের মহসিন (৪৫), পাঠানটোলার মো. আতিক (৫৮), খুররম চৌধুরী টুটল (৪৫), আশিকুজ্জাম স্বপন (৫৫), উজ্জ্বল (৫০), মো. মৃদুল (২২), মহসিন উজ্জামান মহসিন (৪৮), ফারুক মোল্লা (৪৮), চর দেলধার আলমগীর হোসেন (২৫), শিয়ালকুলের মো. তসলিম (৩০), কালামপুরের ইবাদুল হক জাহিদ (৪৫), রেজুয়ান আহমেদ রবিন (৪৭), মো. বাবুল হোসেন বাবু (৪০), ওয়াসিম (২৬), ইমন (২৪), আরাফাত (৩৫), ইসরাফিল (৪০), সাগর (৩০), বরাটিয়ার আদনার (৩৮), মাওলানা আব্দুর রউফ (৬২), পশ্চিম বাসনার ইসমাইল চৌধুরী সুমন (৩৫), ভালুমের শামীম হোসেন (৪৮), সোহেল মাদবর (৪৬), শরিফ (৪৫), স্বর্ণখালীর শামসুল ইসলাম (৬৩), পলাশ (৩৫), সাইফুল্লাহ (৫০), বাথুলির শামীম (৪৮), কৃষ্ণপুরার মোজাম্মেল হক (৫০), আরিফ হোসেন (৩৫), আইয়ুব আলী (৪৫), হাতকোড়ার আনোয়ার হোসেন (৫৫), বালিথার সুলতান মুন্সি ওরফে টেপা (৪২), মোতালেব (৪০), মোশারফ হোসেন (৪৫), নান্নারের জহিরুল ইসলাম (৩০), মো. শহিদুল্লাহ (৫০), কায়েতপাড়ার সোয়েব খান (৫৮), চৌদালিপাড়ার মুজাহিদ (৫৫), ছোট আশুলিয়ার শফিকুল ইসলাম শফি (৫০), ছোট ইকুরিয়ার আতিকুর রহমান আতিক (৪০), ছোট চন্দ্রাইলের মিজানুর রহমান জুয়েল (৩৪), আমিনুল ইসলাম সবুজ (৩৫), ফরহাদ হোসেন রিমন (৩৫), শিয়ালপাড়ার জাজরিস হাসান (৩০), কাশিপুরের মো. তাজ (২৪), চৌহাটের মাসুদ হোসেন (৪৮), কান্দাপাড়ার শাহজাহান (৬৫), পাল্লির আক্কাস আলী (৬০), সুজন মিয়া (৩৫), জহিরুল ইসলাম (৩০), মাখুলিয়ার বদরুল সরদার (৪৫), সেনাইলের মুরাদ (৪০), খরারচরের সাইদুর (৩৫), চর সুঙ্গরের আব্দুল আলীম (৫০), আমজাদ হোসেন (৫০), দেওনাইয়ের আলী মোল্লা (৪০), চর খন্ডের নুরুল ইসলাম নবিন (৪৫), বালিয়ার মনির (৩৫), ইসলামপুরের লাভলু (৪৫), মো. মনির হোসেন (৩৫), খাগুটিয়ার সম্রাট৷ (২৫), চৌহাট দক্ষিণপাড়ার মাসুদ আহম্মেদ (৫০), বাউখন্ডের মনিরুল ইসলাম লাবু (৬৫), হরিদাসপুরের জলিল হোসেন (৫০), সুঙ্গরের আরিফ হোসেন (৩৫) ও খরাচরের মশিউর রহমান মাখনসহ (৩৮) আরো অনেক নেতাকর্মী।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ধামরাইয়ে সহিংসতার জেরে করা মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।