কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
ভারি বর্ষণের কারণে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা।
কক্সবাজারে অব্যাহত ভারি বর্ষণের কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ লাখের বেশি মানুষ। বৃষ্টির পানির বন্যায় প্লাবিত হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ২৫০ গ্রাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত এলাকা উখিয়া উপজেলা। অতি বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও।
গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে কক্সবাজার পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৩৪ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। কক্সবাজারে আগামী ৩ দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধ্বসের আশংকার কথা জানিয়েছেন তিনি। সমুদ্রে ৩ নং সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের শিক্ষক মোস্তফা সরওয়ার জানিয়েছেন, কুতুবদিয়া পাড়া, ফদনারডেইল, মোস্তাক পাড়া, নাজিরারটেকসহ ৮ গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এসব এলাকায় ১০ হাজারের বেশি পরিবারের বসবাস।
বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীরপাড়, বৌদ্ধ মন্দির এলাকা, কলাতলী, সদর ইউনিয়নের ঝিলংজা ইউনিয়নের ২০টির বেশি গ্রাম। কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়কে প্লাবিত হয়ে, একপর্যায়ে অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতেও ঢুকে পড়ে। এতে অনেক বাড়ি ঘরের আসবাবপত্র, দোকানের মালামাল নষ্ট হচ্ছে।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ. কে. এম তারিকুল আলম বলেন, জলাবদ্ধতা এই শহরে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই সমস্যা নির্মূলে পৌর মেয়রের নেতৃত্বে পৌর পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে নাল নর্দমা দখল করে নির্মিত স্থাপনা ধ্বংস করে পুণরায় উদ্ধারের কাজ শুরু করেছি।
জেলায় সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত এলাকা উখিয়া উপজেলা। যেখানে ২ শতাধিক গ্রামের ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি থাকার তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা।
হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নে ২০ গ্রামের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্ধি রয়েছে। যেখানে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ রয়েছে। ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড পুরোটাই পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় আছে।
জালিয়াপালং ইউনিয়নের এসএম ছৈয়দ আলম জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরো এলাকার মানুষ এখন পানিবন্দি। যেখানে ৫০টি গ্রামের ৫০ হাজারের অধিক মানুষ রয়েছে।
রাজাপালং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ওই ইউনিয়নের ৫০ গ্রামের ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকাও পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ভূমিধ্বসের আশংকা দেখা দিচ্ছে। একইভাবে পালংখালী ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। যেখানে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি রয়েছে।