মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
নরেশ চন্দ্র ঘোষ। ছবি: মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জে কষ্টার্জিত অর্থ পোস্ট অফিসে রেখে বিপাকে পরেছে চার শতাধিক গ্রাহক। এ বিষয়ে প্রতিকার ও পোস্ট মাস্টারের শাস্তির দাবিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। প্রচলিত ব্যাংকের চেয়ে লভ্যাংশ বেশি হওয়ায় এ সকল গ্রাহক পোস্ট অফিসে টাকা জমা করেছিলেন।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, হরিরামপুর উপজেলা পোস্ট অফিসে ২০২৩ সালে চারশত আঠারোজন গ্রাহক ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) করেন। সেসময় পোস্ট মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন নরেশ চন্দ্র ঘোষ।
পরবর্তীতে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে গ্রাহকেরা দেখতে পান তাদের টাকায় কোন লভ্যাংশ যোগ হয়নি। কারণ হিসেবে জানা যায়, পোস্ট মাস্টার স্বেচ্ছাচারিতা করে প্রতিটি গ্রাহকের টাকা লভ্যাংশের বদলে বিনা লভ্যাংশে জমা করেন।
অভিযোগকারী মতিয়ার রহমান বলেন, ব্যাংকের থেকে পোস্ট অফিসে লভ্যাংশ বেশি দেওয়ায় আমি পাঁচ লাখ টাকার এফডি করি। টাকা তুলতে গেলে উপজেলা পোস্ট মাস্টার জানান আমি কোন লভ্যাংশ পাবো না। শুধু মূল টাকা নিতে হবে। আমি তো লাভের আশাতেই টাকা জমা রেখেছিলাম। আমি তো কোন ভুল করি নাই। এ দায় আমি নেব কেন? আমার লভ্যাংশে টাকা চাই এবং পোস্ট মাস্টারের বিচার চাই।
ভুক্তভোগী আম্বিয়া বেগম বলেন, ব্যাংকের চেয়ে পোস্ট অফিসে লাভ বেশি ও নিরাপদ হওয়ায় আমি দুই লাখ টাকা পোস্ট অফিসে এফডি করি। প্রতি লাখে এক বছরের দশ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। সেখানে আমার টাকায় কোন লভ্যাংশই জমা হয়নি। এফডি করার সময় ফরমের জন্য একশত টাকা এবং ঘুষ হিসেবে পাঁচশত টাকা চেয়েছিলেন পোস্ট মাস্টার নরেশ চন্দ্র ঘোষ। তার দাবিকৃত টাকা দেওয়ার পরও আমি কেন ভোগান্তির শিকার হচ্ছি? আমি এর বিচার চাই।
হরিরামপুর উপজেলার বর্তমান পোস্ট মাস্টার মো. কফিল উদ্দিন বলেন, এটা পূর্বে কর্মরত নরেশ চন্দ্র ঘোষের অনিয়ম। এরসাথে আমি জড়িত নই।
সাবেক হরিরামপুর উপজেলা পোস্ট মাস্টার (বর্তমানে সাভার ক্যান্টনমেন্ট সাব পোস্ট অফিসে কর্মরত) নরেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে এ ভুলটি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে স্যারেরা কাজ করছেন। আশা করছি দ্রুতই সমাধান হবে।
ঢাকা ডিভিশনের পোস্ট অফিস সুপার মো. আব্দুর রহিম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যারা এখনো টাকা উত্তোলন করেনি তারা একটু ধৈর্য ধরলে আমরা লাভের টাকা দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। ইতোমধ্যে যারা টাকা উত্তোলন করেছে তাদের জন্য কিছু করার নাই। পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান আছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।