নিহতের মিছিলে যুক্ত হলো ইমনের নাম

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৪ এএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা গেছেন। ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা গেছেন। ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট মির্জাপুরের গোরাই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ছাত্র-জনতার। এ সময় পুলিশের একটি বুলেট ইমনের বুক দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল।

আজ রবিবার (১৮ আগস্ট) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ইমন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন এলাকার মৃত মো. জুলহাস শেখের ছেলে। তিনি স্থানীয় মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেন।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সামনের সারিতে ছিলেন কলেজছাত্র ইমন আলী। ১০ বছর বয়সে বাবা হারানো চারজনের পরিবারে ইমনই ছিলেন একমাত্র কর্মক্ষম। ফলে ছেলের চিকিৎসার ব্যয় বহনে এরই মধ্যে সহায়সম্বল বিক্রি করেছেন মা রিনা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ইমনই হয়ে ওঠেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে হাল ধরেন পরিবারের। ইমনের ছোট আরও দুই ভাই আর এক বোনের সংসারে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন রিনা বেগম।

পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য ইমনকে মাইক্রোবাসে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে পুলিশ গাড়ি থামায়। পুলিশ যখন জানতে পারে রোগী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ, তখন তারা আহত ইমনকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে পেটে লাথি মারে। পরে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায়। শুধু ইমনকেই নয়, পুলিশ সদস্যরা গাড়ির চালকসহ সঙ্গীদেরও মারধর করে। পরে অনেক অনুনয়-বিনয় করে ছাড়া পান তারা।

পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় ইমনকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি। তবে ভাগ্য ভালো ঠিক সময়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স পান তারা, রওনা হন ঢাকার পথে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঢাকা মেডিকেল কলেজে পর্যন্ত যেতে অস্বীকৃতি জানালে ইমনকে উত্তরার লেক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুদিনেই খরচ হয় লাখ টাকা। অনেক কষ্টে সে টাকা জোগাড় করে তার পরিবার। এরপর ৬ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh