আফসার হোসেন
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
কথা বলছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
অক্টোবরে বাংলাদেশের মাটিতে আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন ছিল নির্ধারিত। টুর্নামেন্ট আয়োজনের সব প্রস্তুতিও সেরে রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংশয় দেখা দেয় বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে। শঙ্কা সত্যি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নিয়েছে আইসিসি।
বর্তমানে বিসিবি অভিভাবকশূন্য। দেশ ছেড়েছেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শোনা যাচ্ছে, বিসিবি সভাপতি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। আইসিসির গাইডলাইন মেনে পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত করতে হবে পরিচালকদের মধ্য থেকেই। বাইরে থেকে সভাপতি নিয়োগের সুযোগ নেই। আবার বর্তমান বোর্ডের সবাই একযোগে পদত্যাগ করলেও সমস্যা। আইসিসি বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ ধরে নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বাংলাদেশকে। বিসিবি পরিচালনা নিয়ে সংকটের মধ্যেই এলো বিশ্বকাপ হাতছাড়া হওয়ার দুঃসংবাদ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বর্তমানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়। চেষ্টা করা হচ্ছে সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের। তবে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভ্রমণ সতর্কতা দিয়ে রেখেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলো।
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আশাবাদী ছিলেন, ‘বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে আইসিসির সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। এটি শুধু ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, রাষ্ট্রীয় বিষয়। বিশ্বকাপে অতিথি দলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের পুরো দেশের সংস্কার কাজ চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে না পারা দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হবে। আশা করছি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশেই হবে।’
২০ আগস্ট নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় আইসিসি। সংস্থাটির বেশিরভাগ বোর্ড সদস্য বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের বিপক্ষে মত দেন। আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিওফ অ্যালারডাইস জানান, ‘বাংলাদেশে বিশ্বকাপটি না হওয়ায় আমরা হতাশ। আমরা জানি, বিসিবি আসরটি স্মরণীয় করে আয়োজন করতে চেয়েছিল।’
এদিকে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ স্লোগানে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট করা হচ্ছে। আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উচ্চ ফলাফল অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতনামা স্পোর্টস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কার্যকর কোলাবরেশনের মাধ্যমে বিশেষায়িত স্পোর্টস সেবা ও অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করবে। স্পোর্টস এবং সায়েন্সের মেলবন্ধন ঘটিয়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্সসহ উন্নত অনেক রাষ্ট্র। সে লক্ষ্যে পৌঁছতে চায় বাংলাদেশও।’
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) স্পোর্টস ইনস্টিটিউট হিসেবে কাজ করছে। সেখানে একটি স্পোর্টস সায়েন্স ডিপার্টমেন্টও আছে। তবু কেন সরকার স্পোর্টস ইনস্টিটিউট করার উদ্যোগ নিল, এই প্রশ্নের উত্তরে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিকেএসপিতে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আছে। কিন্তু সর্বোচ্চ পারফর্ম্যান্সের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। তার জন্যই এই স্পোর্টস ইনস্টিটিউট করা।’