আশুলিয়ায় কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় হামলা, ভাঙচুর

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম

কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় হামলার খণ্ডচিত্র।

কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় হামলার খণ্ডচিত্র।

সাভারের আশুলিয়ায় বেরন এলাকায় কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতিকারিরা। ভাঙচুর শেষে কারখানা বন্ধের হুমকিও দেন তারা।

আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বেরন এলাকায় ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের বিভিন্ন কাঁচ ভাঙা। এছাড়া নিরাপত্তারক্ষীদের কক্ষের সামনে পড়ে আছে ভাঙা সিসিটিভি ক্যামেরা। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ক্যান্টিনের বেশ কয়েকটি কাঁচ ইটপাটকেল ছুঁড়ে ভেঙে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। এছাড়া একটি অফিস কক্ষের ফ্লোরে পড়ে আছে অসখ্য ভাঙা কাঁচের টুকরো। আইসক্রিম প্ল্যান্টের ফ্লোরের অংশে অসংখ্য কাঁচের ভাঙা টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়।

কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল ৯ টার দিকে আশুলিয়ার কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মূল ফটক টপকে ১৫-২০ জন লোক কারখানা চত্বরে ঢুকে মূল ফটক খুলে দেয়। এরপর ১৫-২০ জনের একটি দল রড, লাঠিসোটা নিয়ে কারখানা চত্বরে ঢুকে। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কারখানা জানলার কাঁচ ভাঙচুর করে। এছাড়া মূল ফটকের সিসি ক্যামেরা ও একটি মালামাল পরিবহনের ট্রাকের সামনের কাঁচ ভাঙচুর করে।

কারখানার ফটকে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে থাকা শাহ আলম বলেন, আমি ওই পাশে ডিউটি করছিলাম। ৯টা কি সাড়ে ৯টা হবে হঠাৎ কিছু পোলাপান আসলো। হাতে লাঠি, রড ছিল, অন্যান্য যন্ত্রপাতি ছিল। তারা হঠাৎ আরেক গেটে হামলা করে। এরপর সবাইকে বললাম, কেউ গেটের পাশে যেন না আসে। তারপর আবার দেখি আরো কিছু ছেলেপেলে আরেক গেটেও আসছে। একজন ওপরে যে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে সেখানে উঠে সেটা ভাঙলো। তারপর বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে হামলা করলো।

কারখানার আরেক নিরাপত্তারক্ষী মুকসেদুল বলেন, সকাল ৯টা ২৪ এর দিকে কিছু বহিরাগত ছেলে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে এখানে গেটে এসে নিরাপত্তারক্ষীদের গেট খুলে দিতে বলে। কিন্তু ওরা না খোলার কারণে দেয়াল টপকে কিছু ছেলে ঢুকে আমাদের বলে সরে যা। তারপরে ওরা গেট খুলে বাকিরাও ঢুকে পড়ে। এরপর কাঁচ ভাঙচুর করে। সিসিটিভি ভাঙচুর করে। আরো বলছে, কারখানা খোলা রাখলে আরো ভাঙচুর করবে।

কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (কারখানা প্রধান) নিরেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘সাধারণত সকাল ৬টা থেকে আমরা আমাদের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করি। ৯টা থেকে ৯টা ১০ এর ভেতরে হঠাৎ কিছু বহিরাগত ছেলে আমাদের গেট টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এরপর আমাদের নিরাপত্তারক্ষীকে সরিয়ে দিয়ে গেটটি খুলে দেয়। এরপর ১৫-২০ জনের একটি দল ভেতরে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিল। ঢোকার পরপরই বড় বড় ইটের টুকরা দিয়ে ঢিল মারে। কিছু কাঁচ ভেঙে ফেলে। আমাদের ক্যান্টিন ভেঙে ফেলে। আমাদের ম্যানেজমেন্টকে খুঁজতে থাকে ও হুমকি-ধামকি দেয়। কারখানা বন্ধ করতে বলে। আমরা বলি, এটা তো খাবারের কারখানা। আমাদের তো কিছু নাই। তারপর বলে, আপনাদের ২০ মিনিট সময় দিলাম, এরমধ্যে কারখানা বন্ধ করেন, নাহয় আরো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে। তখন আমরা তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি। তারা আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এরপর আমরা কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের বের করে দেই। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়। তারা যাওয়ার সময় বলে যায়, যতদিন পর্যন্ত দেশ ঠিক না হবে, যদি কারখানা চালান এরকম দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা, ভবনের কাঁচ ও পণ্যবাহী একটি গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করেছে। শ্রমিকরা তো কাজ করতে এসেছিল। তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, ভীত অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh