ক্রিকেট-ফুটবলে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গৌরবগাথা

আফসার হোসেন

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে কি সুবাতাস বইতে শুরু করেছে? হয়তো। সম্প্রতি বাংলাদেশের ফুটবল আর ক্রিকেট পেয়েছে যুগল আনন্দের উপলক্ষ। ২৫ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ ১০ উইকেটে হারায় পাকিস্তানকে। অথচ পূর্বের ১৩ দেখায় ১২ বারই পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। বাকি একটি ম্যাচ ড্র। সিরিজে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ধবলধোলাইও করেছে।

টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর তৃতীয় কোনো দলকে ধবলধোলাই করল টাইগাররা। ৩০ আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামেই গড়ায় সিরিজের দ্বিতীয় আর শেষ টেস্ট। বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতেছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে।

প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে অনবদ্য ১৯১ রান করা মুশফিকুর রহিম ছিলেন ম্যাচসেরা। দ্বিতীয় টেস্টের সেরা লিটন দাস প্রথম ইনিংসে উপহার দেন ১৩৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস। সিরিজের দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ ১০ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই ইনিংসে ব্যাট চালিয়ে করেন ১৫৫ রান। তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সিরিজের সেরা খেলোয়াড়। 

বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাইয়ের দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি হয়তো ভবিষ্যতে পাকিস্তানিদের কাছে বিবেচিত হবে ‘অভিশপ্ত’ হিসেবে। আর বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে পাকিস্তানের মাটিতে পাওয়া বাংলাওয়াশ হয়ে থাকবে চিরস্মরণীয়। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের পেসাররা নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার ১০ উইকেট শিকার করেছেন। হাসান মাহমুদ ৫টি আর নাহিদ নেন ৪টি উইকেট। তাসকিন আহমেদ নেন একটি উইকেট। নাহিদ রানা ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেন। ১৫০ কিলোমিটারের মাইলফলক পার করা প্রথম বাংলাদেশি পেসার নাহিদ। দল হিসেবে টেস্টে পাকিস্তানের মাটিতে ১০ উইকেটে জয় পাওয়া প্রথম দল বাংলাদেশ। উইকেটের হিসেবেও এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।

সাকিব আল হাসান দুই টেস্টে পেয়েছেন ৫ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৭০৮টি উইকেটের মালিক হয়েছেন সাকিব। সব মিলিয়ে পাকিস্তানে অবিস্মরণীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়কে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে অ্যাখায়িত করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

এদিকে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ যুবারা প্রথমবারের মতো জিতেছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। নেপালের মাটিতে অনুষ্ঠিত যুব সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে। পরবর্তী ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১-২ ব্যবধানে হেরেও সেমিতে ওঠে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে হট ফেভারিট ভারতকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত হয় ফাইনাল। অন্যদিকে নেপালের যুবারা সেমিতে টাইব্রেকারে পরাজিত করে ভুটানকে। 

২৮ আগস্ট কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নেপালকে বাংলাদেশ হারায় ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে হারার প্রতিশোধের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের যুবারা মেতে ওঠে শিরোপা উল্লাসে। ৪ গোল করে আসরের সেরা গোলদাতার পুরস্কার জিতেছেন মিরাজুল ইসলাম। ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয়ের নায়ক মোহাম্মদ আসিফ নির্বাচিত হন টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক। নেপালে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করা অনূর্ধ্ব-২০ দলের মিরাজুল, তপু, রাব্বি হোসেন ও চন্দন রায় সুযোগ পেয়ে গেছেন মূল জাতীয় দলেও। ভুটানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে তাদের স্কোয়াডে রেখেছেন জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh