নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
বিএনপির লোগো।
দেশে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে মনে করছে বিএনপি। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এই কাজে যুক্ত বলে মনে করে দলটি। বিএনপির ভাষ্য নানা ইস্যু সামনে এনে নির্বাচনকে প্রলম্বিত করা হবে। কিন্তু এ ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীকে সতর্ক করেছেন হাইকমান্ড।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই– সম্প্রতি এই মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ কয়েকটি সংগঠন রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে। রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে গত মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দিনভর দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের পরামর্শ নেন। এর পর জরুরিভাবে গতকাল বুধবার সকালে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে দলের অবস্থান জানায়।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশ অস্থিতিশীল হলে নির্বাচনী ব্যবস্থা আরো প্রলম্বিত হবে। সাংবিধানিক দোহাই দিয়ে আরেক ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব হতে পারে। তারা দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে এমন ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক করেছেন। রাষ্ট্রপতি অপসারণের আন্দোলনে সম্পৃক্ত না হতে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সবাইকে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপি যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। এরই অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে রাখতে কাজ করছে তারা। ইতোমধ্যে সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালালে গণতন্ত্রকামী ও আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি একটি সাংবিধানিক পদ বা একটি প্রতিষ্ঠান, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এ পদটি হঠাৎ ফাঁকা হলে সাংবিধানিক শূন্যতা দেখা দেবে, রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টি হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ যদি বিলম্বিত হয়, বাধাগ্রস্ত হয় বা কণ্টকাকীর্ণ হয়, তা জাতির কাম্য নয়। পতিত ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র নিয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।