সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ পিএম
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
দিন দিন ঢাকা পরিণত হচ্ছে দাবি আদায়ের আন্দোলনের শহরে। প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন পক্ষ তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে সচিবালয়সহ নানা স্থানে হাজির হচ্ছেÑরাস্তা অবরোধ করছে, জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। এর সর্বশেষ নজির দেখা গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করার ঘটনায়। এ সময় আশপাশের এলাকাগুলোই কেবল স্থবির হয়ে পড়েনি; যাত্রী দুর্ভোগের বিভিন্ন চিত্রই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
একটি গণতান্ত্রিক সমাজে নানা দাবিদাওয়া এবং তা আদায়ে আন্দোলনের চর্চা স্বাভাবিক ঘটনা। বিশেষত বিগত বছরগুলোতে সমাজের বিভিন্ন স্তরে যে বৈষম্য ও অনিয়মের পাহাড় জমে গিয়েছিল, এর অবসান প্রত্যাশা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সম্প্রতি আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে তা কতটা যৌক্তিক, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।
এটা ঠিক যে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করার ফলে এখানকার শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই নানা দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। তবে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, শিক্ষা খাতের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকে, ফলে এর তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া কঠিন। কথাটা মিথ্যে নয়। অথচ আন্দোলনকারীরা তাদের দাবির তাৎক্ষণিক সমাধান চাইছেন। প্রশ্ন হলো, এখন প্রতিটি কলেজই যদি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামে বা অন্য কলেজগুলোও একই ধরনের আন্দোলনে উৎসাহী হয়ে ওঠে, তখন কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে?
একটি কলেজের ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ হওয়ার কী কী যোগ্যতা বা সামর্থ্য আছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। এমনিতেই দেশে যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলোর মানসম্পন্ন পড়াশোনা নিয়ে নানা সংশয় রয়েছে। এর মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে হলে সরকারকে ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হতে গেলে যে ধরনের পূর্বশর্ত থাকা জরুরি, তা পূরণ করতে না পারলে আসলে শিক্ষার্থীদের লাভ হবে না।