আফসার হোসেন
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম
লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর খেতাব জিতেছেন স্প্যানিশ তারকা রদ্রি। ফ্রান্স সাময়িকীর দেওয়া পুরস্কারে সেরা ৩০ জনে ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে তিনি আছেন বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফার বর্ষসেরা সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ঘোষণা করা হবে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের নাম। এরই মধ্যে ফিফা ঘোষণা করেছে সংক্ষিপ্ত ১১ জনের তালিকা। ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট সময়ের পারফরম্যান্স বিবেচনায় তালিকায় আছেন রদ্রি, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহ্যাম। যারা ব্যালনে যথাক্রমে দ্বিতীয় আর তৃতীয় হয়েছিলেন। এ ছাড়া আছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর্লিং হাল্যান্ড, ডানি কারবাহাল, লামিনে ইয়ামাল, টনি ক্রুজ, ফেদ্রিকো ভেলভার্দে ও ফ্লোরিয়ান রিৎজ। আছেন মেসিও। প্রশ্ন উঠেছে, ব্যালনে উপেক্ষিত মেসি কীভাবে ফিফার তালিকায় চলে এলেন?
প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যালন ডি’অর আর ফিফা অ্যাওয়ার্ডের চরিত্র নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ১৯৫৬ সাল থেকে প্রবর্তিত ব্যালন শুরুতে দেওয়া হয়েছে শুধু ইউরোপীয় খেলোয়াড়দের। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপিয়ান লিগে খেলা ভিন্ন মহাদেশের খেলোয়াড়রাও ব্যালন ডি’অর অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিবেচিত হয়েছেন। আর ২০০৭ সাল থেকে ব্যালন উন্মুক্ত করা হয় সারা বিশ্বের যেকোনো লিগে খেলা ফুটবলারদের জন্য। ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রবর্তন ২০১০ সালে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত যা ছিল ব্যালনের সঙ্গে একত্রীভূত। ২০১৬ সাল থেকে পৃথকভাবে দেওয়া হয় ফিফা অ্যাওয়ার্ড।
ফিফা আর ব্যালন অ্যাওয়ার্ডের সংক্ষিপ্ত তালিকা আর বিজয়ীদের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের রায়ে ভিন্নতা দেখা গেছে। ২০২১ সালে ব্যালন জিতেছিলেন মেসি। আর ফিফা বর্ষসেরা হয়েছিলেন পোলিশ তারকা রবার্ট লেভেন্ডভস্কি। ২০২২ সালে ব্যালনে বাজিমাৎ করেন করিম বেঞ্জেমা। ফিফা অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন মেসি। মূলত ব্যালনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয় নিজেদের বিশেষজ্ঞ প্যানেল দিয়ে। সাংবাদিকদের বিশেষ জুরি কাজ করে। কোন সাংবাদিকরা থাকবেন, সেটা চূড়ান্ত হয় ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে। যখন ব্যালন ডি’অরের প্রক্রিয়া শুরু হয়, সে সময় ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে যে ১০০ দেশ থাকে, ওই দেশগুলোর সাংবাদিকদের নিয়ে গড়া হয় আন্তর্জাতিক জুরি। তাদের সঙ্গে থাকেন ফরাসি সংবাদমাধ্যম লেকিপের সম্পাদকীয় সদস্য ও অন্যরা।
অন্যদিকে ফিফা সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বিচারকরা একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করেন। বিশেষজ্ঞ প্যানেলে সাধারণত স্বনামধন্য সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ থাকেন। তারপর চলে ভোট। ফিফায় ভোট দেন প্রতিটি সদস্য দেশের অধিনায়ক, কোচ এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ৭৫ শতাংশ অবদান থাকে তাদের। বাকি ২৫ শতাংশ আসে দর্শকের ভোটে। এখানে প্রায়ই ব্যালন আর ফিফার দেওয়া পুরস্কারে বড় একটি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
ফেরা যাক মেসি প্রসঙ্গে। ফিফা তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, ‘৩৭ বছর বয়সেও ইন্টার, মায়ামি ও আর্জেন্টিনা দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন মেসি। তার নেতৃত্বে ২০২৩ লিগ’স কাপের পর ২০২৪ ইন্টার মায়ামি রেকর্ড গড়ে এমএলএস সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে। এ সময়ে মেসির নেতৃত্বে কোপা আমেরিকা জিতেছে আর্জেন্টিনা। আর দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তিনি সর্বোচ্চ ৬ গোল নিয়ে বছর শেষ করেছেন। তাই মেসি থাকছেন সেরাদের তালিকায়।’