মো. রাসেল ইসলাম
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ এএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ এএম
পাখিদের কলরবে ম্লান হয়ে যায় মানুষের কোলাহল। ছবি: দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুর শহরের প্রবেশ মুখ নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকা। প্রতিদিন বিকেলে স্থানটি হাজারো চড়ুই পাখির কিচিরমিচির আর কলরবে মুখরিত হয়ে ওঠে। পাখিদের কলরবে ম্লান হয়ে যায় মানুষের কোলাহল।
বাসস্ট্যান্ডে বকুল, বট, আমগাছসহ ইলেকট্রিক বিভিন্ন তারে বিকেল হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি এসে বসে। পাখির ঝাঁক আর কিচিরমিচিরে নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে আসা যাত্রীরা মনে প্রশান্তি নিয়ে যাত্রা শুরু করে গন্তব্যে। সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসে ততই পাখির আনাগোনা বাড়তে থাকে।
দিনাজপুর নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকার এই চিত্র এখন প্রতিদিনের। এলাকাটি পাখিদের নিরাপদ আবাস। বিকেল হলেই গাছের ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাতার চেয়ে পাখিই বেশি দেখা যায়। বিদ্যুতের লাইন, ডিসলাইন, ইন্টারনেটের তার, টেলিফোনের তারসহ বিভিন্ন তারে সারি বেঁধে বসে থাকে চড়ুই পাখি।
যানবাহনের শব্দে ঘরমুখো মানুষ যখন ক্লান্ত, ঠিক তখনই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি দেখে থেমে যায় পথচারীরা। শত ব্যস্ততার মাঝেও চড়ুইগুলোর এমন দুষ্টমির দৃশ্য একপলক দেখার লোভ সামলাতে পারে না তারা। পাখির ডাক শুনে আনন্দ পায়।
পাখিদের এমন দুষ্টমিতে একটুও অতিষ্ঠ হন না গাছগুলোর নিচে বসা দোকানিরা। উল্টো কেউ যেন পাখির কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে কড়া নজর থাকে তাদের।
নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক স্টুডিও ব্যবসায়ী মো. ফজলুর রহমান জানান, সারা দিন যখন পাখিগুলো থাকে না তখন মনে হয় তাদের মাঝে কী যেন নেই। বিকেলে যখন পাখি ফিরে কিচিরমিচির শব্দ শুরু করে তখন তাদের মন প্রশান্ত হয়ে যায়। তিনি বলেন, মা-বাবারা শিশুদের আবার ছেলেমেয়েরা বৃদ্ধ অসুস্থ বাবা-মায়েদের এখানে পাখি দেখাতে নিয়ে আসে। খোলা আকাশে পাখিদের ওড়াউড়ি মানুষকে মুগ্ধ করে। বাসযাত্রীরা জানালা খুলে পাখিদের দেখে। পথচারীরাও একসঙ্গে এত পাখি দেখে থমকে দাঁড়ায়।
পাশে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ছাত্র সাকিব হোসেন বলেন, কলেজের পাশে হওয়ায় হাজার হাজার চড়ুই পাখি প্রতিদিন দেখতে আসি। তাদের কিচিরমিচির শব্দে ব্যস্ততম বাসস্ট্যান্ড এলাকাটি মুখরিত হয়ে ওঠে।
পাখিগুলো দেখে বাসস্ট্যান্ডে আসা ট্রেনযাত্রীসহ বাসের স্টাফ এবং ব্যবসায়ীরা অনেক আনন্দ উপভোগ করেন। পাখিদের কেউ যেন বিরক্ত না করে, সে জন্য আশপাশের দোকানদাররা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। তারা পাখিদের যেন কেউ বিরক্ত না করে সে জন্য ছোট ছোট ফেস্টুন ঝুলিয়ে দিয়েছেন।