অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
শাক-সবজির পুষ্টিমান অনেক। ছবি: সংগৃহীত
ডিসেম্বর মাস প্রায় শেষ। প্রতি বছর শীত এই সময় জেঁকে বসে, আর পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ক্ষুধা। তাপমাত্রা যত কমতে থাকে, মন ততই ব্যাকুল হয়ে ওঠে চা, কফি, স্যুপ, হালিম, নিহারি-পায়ার প্রতি। এ ছাড়া কম তাপমাত্রায় শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতা বাড়ে। তবে আমাদের দেশে গরম ও শীতে তাপমাত্রার যেটুকু হেরফের হয়, ঠান্ডায় শরীরের যেটুকু ক্ষমতা বাড়ে, তার চেয়ে শরীরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় অনেক বেশি। অল্প ক্যালরির তারতম্য শরীর সহ্য করতে পারলেও, ফারাক যদি অনেক হয়ে যায়, তাহলে শরীরের পক্ষে সেই ধকল সামলানো সম্ভব নয়।
বাংলার শীত যেন পিঠাপুলি ছাড়া পরিপূর্ণ হয় না। শীতের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পিঠা খাওয়ার রীতি বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ। পিঠার অন্যতম উপাদান চালের গুঁড়া, এর সঙ্গে লাগে গুড়সহ নানা উপকরণ। এর সবই শর্করাজাতীয় খাবার। সে কারণে পিঠায় ক্যালরি বেশি, রক্তে শর্করা বাড়ায়। শীতের আরেকটি প্রিয় খাবার হলো হাঁসের মাংস। তবে এতে চর্বি বেশি থাকে এবং চামড়াসহ খাওয়া হয় বলে এই মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বেশি।
শীতে নানা রকম শাক-সবজি ওঠে বাজারে। এসব শাক-সবজির পুষ্টিমান অনেক। তাই প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সবজি মিলিয়ে খান। সবজি স্যুপ করে খেলে শীত কাটবে। এক বাটি পুষ্টিকর স্যুপ শুধু শরীর ভালো রাখতেই নয়, মন ভালো রাখতেও একাই একশ! এতে পেটও ভরবে, ফলে জাঙ্কফুড ক্রেভিংস কমবে। তবে রেডি-টু-কুক স্যুপ এড়িয়ে চলুন।
ডালের মধ্যে মুগ, ছোলা, সয়াবিনও সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ইচ্ছামতো মসলাপাতি দিয়ে বানাতে পারেন। তেলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখলে কোনো সমস্যা নেই। প্রতিদিনের খাবারে দারচিনি, আদা, হলুদ, রসুন, লবঙ্গ ও গোলমরিচের মতো মসলা ব্যবহার করুন। এগুলো শরীর গরম রাখার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সুরক্ষাও দেবে। পাশাপাশি এগুলো অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
স্ন্যাক্স খেতে ইচ্ছা হলে লবণ ছাড়া বাদাম, ড্রাইফ্রুটস- কাঠবাদাম, কাজু, কিশমিশ, আখরোট ও খোবানি খেতে পারেন। এগুলো পুষ্টিকর তো বটেই, পাশাপাশি দ্রুত পেট ভরানোর জন্য আদর্শ। তবে দিনে ৬-৮টার বেশি এই জাতীয় বাদাম বা ড্রাইফ্রুট না খাওয়াই ভালো।
সাধারণ রান্নার পরিবর্তে গ্রিলড বা রোস্টেড খাবার খেতে পারেন। এগুলোও শরীরকে স্টিমুলেট করে, অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন করে। টোস্ট বা ডিপ-ফ্রাই করা খাবারের খুব ভালো বিকল্প এই ধরনের পদ।
চা-কফির প্রতি মন যতই ব্যাকুল হোক, ক্যাফেইনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরে যত বেশি ক্যাফেইন ঢুকবে, ততই পানির পরিমাণ কমবে এবং শরীর সহজেই ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়বে।
শীতে পানি পানের সমস্যা কমবেশি সবারই হয়। ঘন ঘন তৃষ্ণা পায় না, ফলে বেশির ভাগ সময়ই শরীরে পানির ঘাটতি থেকে যায়। তাই এ সময় পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। ঘন ঘন পানি, জুস, গ্রিন টি খেতে পারেন। ঈষদুষ্ণ পানীয় (চিনি ছাড়া) খেলে আরো ভালো। শরীর গরমও থাকবে, আর্দ্রও থাকবে।
এ সময়ে নিয়মিত একটি করে কাঁচা হলুদ ও আমলকী বেটে তার রস খেতে পারেন। এটা ইনফেকশন প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।