প্লে টু লার্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪১ পিএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

'প্লে টু লার্ন' প্রকল্প বাস্তবায়ন। ছবি: সংগৃহীত

'প্লে টু লার্ন' প্রকল্প বাস্তবায়ন। ছবি: সংগৃহীত

শিশুর মানসিক বিকাশকে গুরুত্ব দিয়ে ‘প্লে টু লার্ন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ। এটির মূল বিষয়বস্তু হলো- শুধু স্বাভাবিক সময়ে নয়, দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতেও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা সমান জরুরি।

কক্সবাজারে অবস্থানরত মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ নিশ্চিত করতে ব্র্যাক, আইআরসি ও নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে ‘প্লে টু লার্ন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ।  

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে কক্সবাজারে ‘প্লে উইথ এ পারপাস’ দিনব্যাপী এক শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। 

দিনব্যাপী কর্মশালার নানা পর্যায়ে ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের খেলা ও বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা নিশ্চিত করতে দুটি রোহিঙ্গা শিশু চরিত্র তৈরি করে সিসেমি ওয়ার্কশপ। নূর ও আজিজ নামের এই দুই শিশু চরিত্র রোহিঙ্গা শিশুদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। নূর ও আজিজকে নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় তৈরি করা হয় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষামূলক ভিডিও কন্টেন্ট। যা ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ব্র্যাকের প্লেল্যাব ও ইউএনএইচসিআর এবং সহযোগী সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন, টেরে দেস হোমস (টিডিএইচ), রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল ও কোডেক-এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের দেখানো হয়েছে। 

পাশাপাশি এ প্রকল্প থেকে ১২টি গল্পের বই বার্মিজ, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় উন্নয়ন ও প্রকাশ করা হয়েছে। এসব বই কক্সবাজারের ১৪টি সংস্থার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বিতরণ করা হয়েছে এবং প্রায় দুই লক্ষের মতো শিশু বইগুলো ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া বাড়িতেও শিশু বিকাশের পরিবেশ তৈরিতে বিতরণ করা হয়েছে শিশু বিকাশ হোমকিট। একই সঙ্গে অভিভাবক ও শিশু যত্নকারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

কর্মশালায় আরও জানানো হয়, গত ছয় বছর ধরে চলমান ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা শিশু, অভিভাবক এবং শিশু যত্নকারী সরাসরি উপকৃত হয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রকল্পের আওতাধীন শিশুদের মধ্যে ৭০ শতাংশ শিশুর সার্বিক বিকাশ সাধিত হয়েছে। ৯১% শিশুর মানসিক বিকাশ হয়েছে এবং ৯৬ শতাংশ শিশু যত্নকারী ও অভিভাবকরা শিশুদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হয়েছেন।

সিসেমি ওয়ার্কশপ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিশুতোষ টেলিভিশন সিরিজ সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। দুপুরের সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামস উদ দ্দোজা। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিসেমি ওয়ার্কশপ ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাসহ দাতা সংস্থা, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও দেশি উন্নয়ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা। আলোচনায় যেকোনো দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh